যাত্রীদের যাতায়াত সুবিধা ও ভাড়া নৈরাজ্যের আরেক ফাঁদ ই-টিকিট

 রাসেল সরকারঃ    আধুনিক গণপরিবহণ সেবার একটি অংশ ই-টিকিটিং। যাত্রীদের যাতায়াত সুবিধা ও ভাড়া নৈরাজ্য নিরসনে রাজধানীতে গত বছরের ১৮ নভেম্বর প্রথম ই-টিকিট সিস্টেম চালু করে ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতি। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ঠেকাতে রাজধানীর প্রায় বেশিভাগ গণপরিবহণে ই-টিকিটিং শুরু হলেও ভাড়া নৈরাজ্য কমেনি। এ পদ্ধতিতে নতুন প্রতারণা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। কোনো কোনো স্টপেজে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। অন্যদিকে টিকিট বিক্রেতাদের দাবি, ই-টিকিটিং আগের চাইতে প্রতি স্টপেজে ভাড়া দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত কমে

গেছে। আজ রাজধানীর কাকরাইল থেকে শাহবাগ যেতে তরঙ্গ প্লাস পরিবহণে ওঠেন একটি প্রাইভেট কোম্পানির কর্মকর্তা রুহুল আমিন (৪২)। ই-টিকেটে ভাড়া ১০ টাকা হলেও মৌচাক থেকে শাহবোগের ১৫ টাকার টিকিট দেয়া হয় তাকে। পরে ওই ১৫ টাকার টিকিট এবং ভ্রমণের স্থান এলোমেলো থাকায় টিকেটটি নিতে তিনি অনীহা প্রকাশ করলে কাকরাইল থেকে সাইন্সল্যাবের ১৫ টাকার টিকিট দেয়া হয় তাকে। সেটিও নেননি তিনি। পরে মৌচাক থেকে শাহবাগের স্টুডেন্ট ভাড়ার ১০ টাকার টিকিট দেন ঢাকা মেট্রো বি-এ ১৩-১১৩০ এর এসিস্ট্যন্ট খোকন (২৭)। কেন একজন যাত্রীকে তিন ধরনের টিকিট

দিয়েছেন জানতে চাইলে তরঙ্গ বাসটির হেল্পার খোকন বলেন যেভাবে যান ভাড়া ১৫ টাকা। এসময় ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির ভ্রাম্যমান আদালতের চেকাররা গাড়িতে ওঠেন। এরপর কাকরাইল থেকে শাহবাগের যাত্রীদের ১০ টাকার টিকেট দেয়া শুরু করেন খোকন। কেন ১০ টাকার ভাড়ার টিকেট পরিবর্তে পনের টাকার টিকেট দিয়েছেন? প্রশ্নের জবাবে খোকন কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এই বিষয়ে যাত্রীদের অভিযোগের কোন রকম গুরুত্ব না দিয়ে শুধু টিকিট আছে কি না এটি চেক করে বাস থেকে নেম যান ভ্রাম্যমাণ আদালতের চেকাররা। যাত্রীদের অভিযোগ ১০ টাকার ভাড়ার টিকিটের

স্থান পরিবর্তন করে তাদের কাছ থেকে ১৫ টাকা করে নিচ্ছেন হেল্পাররা। মৌচাক থেকে ঝিগাতলা যাচ্ছেন হাসিবুল (২৮)। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের এই ভাড়ানৈরাজ্য থেকে মুক্তি মিলবে না? যাত্রাবাড়ী থেকে মোহাম্মদপুরগামী মালঞ্চ পরিবহণ ঢাকা মেট্রো বি-এ ১৫-০৪৭০-এর বাসে ভাড়া নিয়ে টিকিট না দেয়ার অভিযোগ করেন যাত্রীরা। গুলিস্তান থেকে সয়েন্সল্যাব যাবেন সিটি কলেজ শিক্ষার্থী

প্রিন্স মাহমুদ। তিনি জানান, বাসে ওঠার ভাড়া নিলেও টিকিট দেয়া হয়নি তাকে। একই ধরনের অভিযোগ করেন সোহেলসহ আরও কয়েকজন যাত্রী। ভাড়ার টাকা নেয়া হলেও কেন টিকিট দেয়া হয়নি জানতে চাইলে মালঞ্চবাসটির হেল্পার শাফায়েত বলেন, অনেকে টিকিট চাননি তাই দেয়া হয়নি। এই বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির ভ্রাম্যমাণ আদালতের পরিচালক রাজু আহমেদ বলেন, আমরা সবগুলো বাসে ই-টিকিট চূড়ান্তভাবে চালুর চেষ্টা করছি। এবং যে কোন ধরনের অনিয়ম ও অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি আমরা। সকল অনিয়ম নিরসনে অভিযান চলমান রয়েছে বরেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top