সৈয়দ জাহিদুজ্জামান দিঘলিয়া খুলনা থেকে::::: খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট হাজী নৈমুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিজেস্ব ও স্থানীয়ভাবে নির্মীত ভবনগুলো অনেক পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দেয়াল, ছাদ ও রড ঢালাই ভিমের বেরিয়ে গেছে ভেতরের রড। পাঠদান চলে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে। গাদাগাদি বসে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষা চলছে দুই পালায়। পাশাপাশি রয়েছে শিক্ষক সংকট। এমন চিত্র জানা গেছে বিদ্যালয়টি সরেজমিনে পরিদর্শনে। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তি পাল এ প্রতিবেদককে জানান, বিদ্যালয়ের স্থানীয় ও নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত সব কটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বাধ্য হয়ে ক্লাস নিতে হচ্ছে। সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। এখানে নতুন ভবন প্রয়োজন। কয়েক বছর আগে দুইতলা ভবনের ছাদে দুতল ভবন বরাদ্দ হয়েছিল। নির্মাণ কাজ করার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান এ ভবনের ওপর নতুন দুইতলা ভবনের উর্ধ্বমুখি কাজ সম্ভব নয়। যে কারণে উর্ধ্বমুখি কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে নতুন ভবন নির্মাণ তালিকায় পরবর্তীতে তালিকাভুক্ত হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আদৌ উন্নয়ন কাজ হবে কিনা জানিনা। এদিকে
একাডেমিক ভবন না হলে ক্লাস ও পরীক্ষা কোনোটায় পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে গেছে। এদিকে আরো জানা গেছে, এ বিদ্যালয়ে ২২ জন শিক্ষকের পদের অনুকূলে ১৮ জন শিক্ষক ও ৮ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন। ৪ জন শিক্ষকের পদ শূণ্য রয়েছে বলে প্রধান শিক্ষক এ প্রতিবেদককে জানান। উল্লেখ্য খুলনা জেলার উত্তর সীমান্তে দিঘলিয়া উপজেলার বহু স্মৃতি বিজড়িত জনপদ গাজীরহাটে আতাই নদী কূলে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে ১৯২৭ সালে হাজী নৈমুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে স্থানীয় সুধীজনের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টায় কালিয়ার ঐতিহ্যবাহী সেন বংশীয় জমিদার কর্তৃক ২.৮৬ একর জমি দান পূর্বক তারই পৃষ্ঠপোষকতায় বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতেএ অঞ্চলের একজন দানবীর মরহুম ফাজেল আহম্মেদ মোল্যার দানে তাঁর পিতার স্মৃতি রক্ষার্থে বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয় গাজীরহাট হাজী নৈমুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ১ম স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। যে সকল উদারচেতা ও আত্মপ্রত্যয়ী ব্যক্তির অকৃত্রিম পরিশ্রম ও সাধনায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তাঁরা হলেন মরহুম ফাজেল আহম্মেদ মোল্যা, ইমান উদ্দিন মোল্যা, স্বর্গীয় বাবু কালীপদ বিশ্বাস, স্বর্গীয় বাবু নলিনী কান্ত সাহা প্রমুখ।
গাজীরহাট হাজী নৈমুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের ব্যাপারে কথা হয় দিঘলিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অঃ দাঃ) মোঃ গোলাম মোস্তফার সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আমার সর্বশেষ অবস্থা জানা নেই। আমি শিক্ষা প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করে জানাতে পারব। শূণ্য পদে শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। মণ্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। সিদ্ধান্ত এলেই নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। এ ব্যাপারে কথা হয় দিঘলিয়া উপজেলার উপ সহকারী প্রকৌশলী শিক্ষা মোঃ শফিকুল ইসলাম সোহাগ এর সাথে। তিনি জানান, বিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে মাটি পরীক্ষা হয়েছে। বহুতল ভবনের চলমান প্রক্রিয়ায় প্রথমে একতলা ভবন নির্মাণ হবে। থাপে ধাপে চার তলা ভবন নির্মাণ হবে। যা টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আছে।