সুন্দরবনে হরিণ শিকারে মেতে উঠেছে শিকারিরা

InShot_20240812_184655377.jpg

 শচীন্দ্রনাথ মন্ডল  দাকোপ   খুলনা:::::::  সুন্দরবনে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে হরিণ শিকার। বনের আশপাশ এলাকার শিকারিরা বেপরোয়া হয়ে নিয়মিত হরিণ শিকার করে মাংস বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লাগাতর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এতে দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। এই সুযোগে শিকারিরা হরিণ নিধনে মেতে উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবন সংলগ্ন খুলনার দাকোপ উপজেলার  বানীশান্তা, সুতারখালী ও কালাবগি গ্রামের চিহ্নিত হরিণ শিকারিরা বেপরোয়া হয়ে নিয়মিত হরিণ শিকার করেই চলছে। নদীর জোয়ারে রাতে এবং দিনে ২০ থেকে ২৫ জন দলবদ্ধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করে হরিণ শিকার করছে। হরিণ শিকারে ব্যবহার করা হচ্ছে নিজেদের তৈরি দড়ির ফাঁদ। বর্ষা মৌসুমে প্রত্যন্ত অঞ্চল সুতারখালী ও কালাবগি গ্রামের মাটির রাস্তা কাদা হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি না থাকায় শিকারিসহ তাদের স্বজনদের ঘরে ঘরে অবাধে রান্না

 

হচ্ছে হরিণের মাংস। নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন জেলে জানান, হরিণ শিকার আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। গভীর বনে ফাঁদ পেতে শিকার করা হরিণের মাংস বিক্রি করছে শিকারিরা। জেলেরা বলছেন, শিকারিদের বিরুদ্ধে কথা বললে তাদের হুমকি দেওয়া হয়। এছাড়া বর্তমানে দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সদস্যরা না থাকায় গত ৮ থেকে ১০ দিনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে শিকারিরা। তবে যেসব শিকারিরা বনে যাচ্ছে তাদের দলের অনেকের নামে আগে থেকেই হরিণ শিকারের মামলা রয়েছে। নলিয়ান গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় সংবাদকর্মী মো. আবুল বাশার বলেন, দেশের এই অস্থিতিশীল অবস্থায় এলাকার সুযোগ সন্ধানীরা প্রশাসন না থাকায় হরিণ শিকারে মেতে উঠেছে। তারা শিকার করা হরিণের মাংস নিয়মিত বিক্রি করছে এবং যতদিন যাচ্ছে, এই প্রবণতা বেড়েই চলছে। দাকোপ উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর কুমার রায় এ প্রতিবেদনেক কে বলেন, বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যদি সঠিক নজরদারি না দেয় তাহলে এই অপকর্ম চলতে থাকবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের নির্ঘুম রাত

 

কাটাতে হচ্ছে। তাছাড়া সবসময় আইন দিয়ে মানুষকে আটকানো যায় না, এক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আর তা না হলে দুর্বৃত্তরাতো দুর্বৃত্তায়ন করবেই। সচেতনতা বাড়াতে পারলে সুন্দরবনে হরিণ শিকারিদের অপতৎপরতা ঠেকানো যাবে। অভিযোগ রয়েছে, সুন্দরবন ও এর পাশর্^বর্তী অঞ্চলে পেশাদার হরিণ শিকারিদের আছে বিশেষ সিন্ডিকেট এবং তাঁদের সঙ্গে থাকে এজেন্ট ব্যবসায়ীরা। এসব এজেন্টের মাধ্যমে কখনো অগ্রিম অর্ডার আবার কখনো মাংস এনে তারপর বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হয়। ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে খুশি মনে হরিণের মাংস কিনছে একশ্রেণির মানুষ। সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের সহকারি বন সংরক্ষক এজেডএম হাছানুর রহমান মুঠোফোনে এ প্রতিনিধি কে বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে হরিণ, মাছ ও কাঁকড়া শিকার থেকে বিরত থাকার জন্য সকলকে সচেতন করা হচ্ছে। আমাদের টহলদল প্রতিদিন সুন্দরবনে পাহারা দিচ্ছে। তবে যারা অবৈধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করে হরিণ, মাছ ও কাঁকড়া শিকার করছে তারা মূলত রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top