খুলনায় পেঁয়াজ ও কাঁচা ঝালের বাজার অস্থির ক্ষুদ্ধ ক্রেতা

IMG_20240716_093340.jpg

প্রতিবেদকঃ  সৈয়দ জাহিদুজ্জামানঃ   মাত্র এক মাস আগে ৭৫ টাকা কেজি দরে দেশি পেঁয়াজ কিনেছিলেন খুলনা শহরের দোলখোলার ইজিবাইক চালক আঃ সালাম। রবিবার সকালে তিনি পেঁয়াজ কিনেছেন ১২০ টাকা কেজি দরে। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ৪৫ টাকা বাড়ায় ক্ষুব্ধ তিনি। তবে সেই ক্ষোভ মনে চেপেই বাজার সেরেছেন। তিনি বলেন, শুধু কি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে; চাল, কাঁচা মরিচ, ব্রয়লার মুরগি+সবইতো বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এভাবে সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছি। আর পারছি না। আকরামের মতো অনেক ক্রেতাই পাওয়া যায়, যারা জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ। এর পেছনে যৌক্তিক কারণও রয়েছে। বাজারে প্রতি সপ্তাহেই বিভিন্ন ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। বিপরীতে যেটুকু দাম কমছে, তা নগন্য। এই যেমন গত এক সপ্তাহে বাজারে নতুন করে চালের দাম বেড়েছে। এর সঙ্গে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি, পেঁয়াজ, করলাসহ কয়েক ধরনের সবজির দাম। বিপরীতে হাতে গোনা দু-চারটি পণ্যের দাম সামান্য কমেছে। গতকাল বড়

 

বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। পেঁয়াজের কথা দিয়েই শুরু করা যাক। এক মাস আগে বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ৭৫-৮০ টাকা। গতকাল খুলনার বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম উঠেছে ১১০-১২০ টাকা। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত এক মাসে বাজারে পেঁয়াজের দাম ৪০-৫০ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম অনেক দিন ধরেই ১০০ টাকার ওপরে রয়েছে। গতকাল বিদেশি পেঁয়াজ ১১০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, দেশে তিন মাস ধরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপর রয়েছে। সর্বশেষ গত জুনে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক ৪২ শতাংশ। বর্তমানে বাজারে বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম উচ্চ মূল্যে স্থির হয়ে আছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে বেড়েছে চালের দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সব ধরনের চিকন ও মোটা চালের দাম কেজিতে, ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর বাসমতী চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৬ টাকার বেশি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোরবানির ঈদের পর থেকেই বাজারে ধানের দাম ঊর্ধ্বমুখী। আর ধানের দাম বাড়ায় চালের দাম বাড়িয়েছেন চালকলের মালিকেরা।

 

বাজারে কাঁচা মরিচের দাম এখনো বেশ চড়া। বিক্রেতারা জানান, চলতি বছরের এপ্রিলে দেশে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে মরিচগাছ নষ্ট হয়ে যায়। এতে স্থানীয়ভাবে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয় এবং দাম বাড়তে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত থেকে আমদানি বাড়লেও বাজারে মরিচের দাম সেভাবে কমেনি। সর্বশেষ দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে ভালো মানের কাঁচা মরিচ ২২০-২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে কম মানের কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কম; ২০০-২৪০ টাকা কেজি। বড় বাজারের সবজি বিক্রেতা মিজান জানান, গত মাসের শেষ দিকে টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে যায়। পরে সরবরাহ ঠিক হলেও কিছু পণ্যের দাম বাড়তি রয়ে গেছে। প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ১০০’ টাকা দরে। অথচ স্বাভাবিক সময়ে তা ৬০ টাকার আশপাশে থাকে। এভাবে প্রতি কেজি বেগুন ও বরবটি ৮০-১২০ টাকা, আলু ৬০-৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে কোরবানির পর থেকে বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৬০-১৭০ টাকা। তবে গত দুই দিনে কেজিতে ১০ টাকা দাম বেড়েছে। গতকাল বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আর সোনালী মুরগি ২৮০ টাকা কেজি দরে অপরিবর্তিত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top