সৈয়দ জাহিদুজ্জামান দিঘলিয়া খুলনাঃ দিঘলিয়ায় আবাসন প্রকল্পের ব্যবসায়ীদের তৎপরতা বর্তমানে ফসলী জমি আগ্রাসীর ভূমিকায়। দিন দিন এ উপজেলায় ফসলী জমি কমে যাচ্ছে। কৃষকদের মাঝে নেমে এসেছে চরম হতাশা ও উৎকণ্ঠা। নেই আইনি কোনো প্রয়োগ।
এলাকার কৃষক ও কৃষিবান্ধব ব্যক্তিরা জানান, দিঘলিয়া উপজেলায় নতুন নতুন আবাসন প্রকল্পের মালিকদের নিত্য নতুন আকর্ষণ ও ফসলী জমি উচ্চ মূল্যে ক্রয় করে বালু ভরাট করে আকর্ষণীয় নামে নামকরণ করে উচ্চ মূল্যে নতুন নতুন ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে। ফলে দিঘলিয়া উপজেলায় ব্যাপক হারে ফসলী জমি কমে যাচ্ছে। দিঘলিয়ায় কয়েক বছর আগে যেখানে আমন ধানের চাষ হতো ৫/৬ হাজার হেক্টর জমিতে সেখানে আমন ধানের চাষের জমি কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৫০ হেক্টর। কিছু জমিতে মাছের ঘের হলেও বেশীরভাগ কৃষি জমি গ্রাস করেছে
নতুন নতুন আবাসন প্রকল্প ও আশ্রয়ন প্রকল্প। দিঘলিয়ায় আবাসিক এলাকায় শত শত হেক্টর ভিপি, এনিমি প্রপার্টি ও খাস খতিয়ানের জমি ভূমি দস্যুদের অবৈধ দখলে থাকলেও সরকারি আবাসন প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হয়েছে ধান চাষের দোফলা ও ত্রিফলা জমিতে। অপর দিকে আবাসন প্রকল্প ব্যবসায়ীরা দোফসলী ধান চাষের জমি উচ্চ মূল্যে ক্রয় করে বালু ভরাট করে নতুন নতুন আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলছে। ফরমাইশখানা নিবাসী মোল্লা কামরুল ইসলাম জানান, ৫/৬ বছর আগে আমরা যেখানে ধান চাষ করেছি সেখানে আজ আবাসিক এলাকা গড়ে উঠেছে। আমাদের গ্রামের পূর্ব এলাকায় ধানি জমিতে এখন বাড়িঘর তৈরি হয়েছে। ধানি জমি নেই বললেই চলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি বলেন, দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেক খাস খতিয়ান, ভিপি তালিকার ও এনিমি প্রপার্টি অবৈধ প্রভাবশালী মহলের দখলে আছে। স্থানীয় প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিগণ সেদিকে দৃষ্টি না দিয়ে ধানি জমিতে আশ্রয়ন প্রকল্প গড়ে তুলেছে। ভূমি দস্যুরা ধানি জমিতে বালু ভরাট করে গড়ে তুলছে নতুন নতুন আবাসন প্রকল্প। বিক্রি হচ্ছে ভবিষ্যতে বাড়ি
করার মানসে। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে দিঘলিয়া থেকে ফসলি জমি হারিয়ে যাবে। এখনই ফসলী জমি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন ও উর্ধতন সকল প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আইনের প্রয়োগ দরকার।
এ ব্যাপারে কথা হয় দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ কিশোর আহমেদ এর সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, কৃষি উন্নত দেশে কোথায় আবাসন, কোথায় শহর ও হাটবাজার গড়ে উঠবে তা সুনির্দিষ্ট করা থাকে। কৃষি জমি নষ্ট করে কোনো কিছু করলে কি শাস্তি হবে তাও আইনে উল্লেখ আছে। আমাদের দেশে কৃষি জমির ব্যাপারে কোনো আইন নেই। যা কিছু বলা হয় সবই মৌখিক। তাদের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়ায় কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না। মৌখিকভাবে কুফল তুলে ধরে সচেতন করা যেতে পারে।
সৈয়দ জাহিদুজ্জামান ০১৯৩৫৭৮৫৬৮০