কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা ইমরান হোসেন ইমুঃ র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী, খুন ও অপহরনসহ কিশোর অপরাধ দমনে র্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার দক্ষিন কেরাণীগঞ্জ, শ্যামপুর ও কদমতলী এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে “কিশোর গ্যাং” লিডার জালাল ওরফে পিচ্চি জালাল বাহিনীর ১৬ (ষোল) সদস্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের নাম ১। শাহ জালাল (১৯), ২। মোকাব্বির হোসেন আয়ান (১৯), ৩। ইমন সরদার (২০), ৪। রাসেল (১৯), ৫। সুজন (১৯) ৬। মুন্না হোসেন (১৯) ৭। রাজু (১৯), ৮। মোঃ হাসান (১৯),৯। লিখন (১৬), ১০। জিসান (১৬),১১। রায়হান শেখ (১৬), ১২। মোমিদ হোসেন (১৫), ১৩। মোঃ রাব্বি (১৬),১৪। আপন খন্দকার (১৩), ১৫। হৃদয় (১৫) ও ১৬। নাজিম (১৩) বলে জানা যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃতরা “কিশোর গ্যাং” লিডার জালাল ওরফে পিচ্চি জালাল বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। তারা জালাল ওরফে পিচ্চি জালাল এর নেতৃত্বে ঢাকার দক্ষিন কেরাণীগঞ্জ, শ্যামপুর ও কদমতলী থানার বিভিন্ন এলাকায় জনবিরল এমনকি জনসমাগমপূর্ণ স্থানে একাকী পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে আশেপাশের কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক মানিব্যাগ, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল হ্যান্ডসেট, ল্যাপটপসহ সাথে বহন করা দ্রব্যসামগ্রীর ব্যাগ প্রভৃতি ডাকাতি করে দ্রæত পালিয়ে যেত। গ্রেফতারকৃত কিশোর অপরাধীরা স্বীকার করে যে, চুরি/ছিনতাই ছাড়াও তারা মাদক সেবন, খুচরা মাদকের ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, পাড়া-মহল্লায় মারামারি এবং তারা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নানা ধরনের অসামাজিক ও অশ্লীল টিকটক ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে আসছিল। প্রায়শঃই তারা এলাকায় প্রভাব বিস্তারকল্পে দলবদ্ধ হয়ে সংঘাত সৃষ্টি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে সাধারন মানুষের চলাচলে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি করে আসছিল বলে জানা যায় ।
গ্রেফতারকৃত ১৬ জন কিশোর গ্যাং এর মধ্যে ১। মোঃ শাহ জালাল (১৯), ২। মোকাব্বির হোসেন আয়ান (১৯),৩। ইমন সরদার (২০),৪। রাসেল (১৯)’দের বিরুদ্ধে শ্যামপুর ছিনতাই মামলায় এবং ১। সুজন (১৯), ২। মুন্না হোসেন (১৯), ৩। রাজু (১৯), ৪। হাসান (১৯)’দের বিরুদ্ধে কদমতলী থানায় অপর ছিনতাই মামলায় মোট ০৮ জনকে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া বাকী ০৮ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে র্যাব-১০ তাদের নিকট হতে মুচলেকা গ্রহণ করে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। র্যাব-১০ আগামী দিনগুলোতে তাদেরকে সার্বক্ষনিক নজরদারীতে রাখবে, যাতে তারা আর কখনো এধরনের অপরাধমূলক কাজে যোগ দিতে না পারে। এছাড়া র্যাব-১০ এর আওতাধীন এলাকায় কিশোর গ্যাং এর সাথে জড়িত অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুদের সনাক্ত করে তাদের সুস্থ্য ও সুন্দর জীবন উপহার দেওয়ার জন্য র্যাব-১০ বদ্ধপরিকর ।