কাশিমপুরের মতিন স্পিনিং মিলসে শ্রমিক নিপীড়নের ঘাঁটি

IMG_20250528_204338.jpg

Oplus_131072

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শ্রমিকের ঘাম ঝরানো ঘরে যখন ন্যায্য অধিকার লঙ্ঘিত হয়, তখন সে শুধু একটি মানবিক সংকট নয়, একটি সামাজিক ন্যায়বিচার ব্যবস্থার প্রশ্নও। গাজীপুরের কাশিমপুরে অবস্থিত মতিন স্পিনিং মিলস্ পিএলসি (ডিবিএল গ্রুপ)-এ ঠিক এমনই এক ভয়াবহ শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগে কেঁপে উঠেছে স্থানীয় পোশাকশিল্প অঙ্গন। মিলটির এইচআর ম্যানেজার মোঃ সাইফুল ইসলাম-এর বিরুদ্ধে উঠেছে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ—তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের বঞ্চিত করে একপ্রকার দালালচক্র পরিচালনা করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ব্যবস্থাপনার ছত্রছায়ায় শ্রমিকদের ওপর মানসিক নিপীড়ন, অন্যায্য চাকরিচ্যুতি এবং প্রাপ্য সুবিধা আটকে রেখে শোষণের এক নিষ্ঠুর সংস্কৃতি গড়ে তুলেছেন।

 

মোছাঃ হামিদা বেগম, একজন অভিজ্ঞ পোশাক শ্রমিক, যিনি ২০২২ সালের ২ অক্টোবর থেকে ‘রোভিং ক্যারিয়ার’ পদে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছিলেন, হঠাৎ ২০২৫ সালের ১৩ এপ্রিল তাকে কোনো প্রকার লিখিত কারণ না দেখিয়ে কারখানায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। এর পর থেকেই শুরু হয় তাঁর বঞ্চনার চিত্র। শ্রম আদালতে দায়ের করা মামলায় হামিদা বেগম জানান, তাঁর প্রায় ১,১৫,০৪০ টাকা বকেয়া বেতন, ক্ষতিপূরণ, অগ্রিম বেতন ও সার্ভিস বেনিফিট আটকে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এর ধারা ২৬, ৩২, ১২৩ ও ১২৪ এর সরাসরি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন তিনি।

 

‘সাইফুল ইসলাম হচ্ছে ভিতরের দালাল’ – শ্রমিকদের ক্ষোভে ফেটে পড়া বক্তব্য, একাধিক শ্রমিক অভিযোগ করেন, সাইফুল ইসলাম শুধুমাত্র মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক নন, বরং তিনি কারখানার অভ্যন্তরে গড়ে ওঠা শ্রমিকবিরোধী দালালচক্রের নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, গোপনে ঠিকাদার চক্রের সঙ্গে মুনাফাভিত্তিক চুক্তি এবং মতবিরোধী শ্রমিকদের চাকরিচ্যুতির অভিযোগ রয়েছে।

 

একজন সিনিয়র শ্রমিক জানান, “আমরা কথা বললে চাকরি চলে যায়, দাবি জানালে বেতন বন্ধ হয়। এভাবে শ্রমিকের মুখ বন্ধ রাখছে সাইফুল। তাঁকে এখনই সরানো না হলে এই জুলুম বন্ধ হবে না।” একাধিক মানবাধিকার সংগঠন ঘটনাটি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। তারা বলছে, সাইফুল ইসলাম কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের সমস্যা নন—তিনি গোটা শ্রমিকশ্রেণির ওপর চাপিয়ে দেওয়া নিপীড়ন কাঠামোর প্রতীক হয়ে উঠেছেন।

 

মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধি বলেন, “সাইফুল ইসলামের ভূমিকা তদন্ত করলে পরিষ্কার হয়ে যাবে—তিনি একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য, যারা শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছে।” হামিদা বেগম আদালতের মাধ্যমে বিচার চেয়ে যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, তা এখন গাজীপুরের শ্রমজীবী মানুষের মাঝে আশার আলো হয়ে উঠেছে। তবে শুধু একটি মামলা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন বিচার বিভাগীয় তদন্ত, দালালচক্রের অপসারণ এবং শ্রম আইন বাস্তবায়ন।

 

মোঃ সাইফুল ইসলামকে অপসারণ ও তদন্তের আওতায় আনা হোক হামিদা বেগমসহ সকল বঞ্চিত শ্রমিকদের প্রাপ্য বেতন ও ক্ষতিপূরণ পরিশোধ নিশ্চিত করা হোক
মতিন স্পিনিং মিলসে শ্রমিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক সকল কারখানায় শ্রম আইন বাস্তবায়নে মনিটরিং সেল গঠন করা হোক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *