নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ শস্য ভাণ্ডার খ্যাত বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার আলুর উৎপাদন অনেক বেশি হলেও ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন নন্দীগ্রামের আলু চাষিরা। এদিকে নিয়োমিত আলুর জমি পরিদর্শন করতে দেখা গেছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের। (১২জানুয়ারি) বুধবার উপজেলার বিভিন্ন মাঠ পরির্দশন করেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজিউল হক, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার অপূর্ব ভট্টাচার্য, উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জাকিরুল ইসলাম ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সালাম। মাঠ পরিদর্শন শেষে কৃষি কর্মকর্তারা জানান, লক্ষমাত্রার চাইতে চলতি বছরে নন্দীগ্রামে আলুর আবাদ বেশি হয়েছে। এছাড়াও গত বছরের চেয়ে এবছর আলুর বাম্পার ফলন হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে নন্দীগ্রাম উপজেলায় ৩ হাজার ২শ ৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে বেশি জমিতে আলু চাষ করেছে কৃষকরা। এই উপজেলার বেশকিছু মাঠে সরেজমিনে গিয়ে আলু চাষিদের সাথে কথা বলে গেছে, ১শ টাকা কেজির চেয়েও বেশি দামে আলুর বীজ ক্রয় করে
আলু চাষ করেছে আলু চাষিরা। আলুর বীজ, সার ঔষুধ, কৃষাণ, হাল চাষ, সেচ বাবদ সহ এ বছর এক বিঘা জমিতে আলু চাষে সর্বমোট প্রায় ৪০ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে তাদের। লাভের আশায় অধিক মূল্য দিয়ে বীজ ক্রয় করে আলু চাষাবাদ করেছেন কৃষকরা। তবে আলু উত্তোলনের আগেই আলুর বাজারে ধস, আলুর ন্যায্য মূল্য না থাকা নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটছে কৃষকদের। উপজেলার ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের কৃষক গোলাপ হোসেন জানান, আমি ১শ টাকার বেশি দামে আলুর বীজ কিনে আলুর চাষ করেছি। প্রতি বিঘা আলু চাষে আমার ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর কিছুদিন পর আলু তুলবো কিন্তু হঠাৎ বাজারে আলুর দাম কমে যাওয়ায় আলুতে এবার ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে বলে মনে হচ্ছে। আলু চাষি সাঈদী বলেন, ১বিঘা জমিতে ১শ থেকে ১২০ মন হারে আলু উৎপাদন হয়। এবছর আলু বীজের অধিক দাম থাকায় বিঘাপ্রতি খরচ হয় ৪০ হাজার টাকার উপরে। লাভের আশায় অধিক দামে আলুর বীজ কিনে ১০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি কিন্তু শুরুতেই আলুর বাজার মূল্য কম। যদি বাজারে আলুর দাম পাওয়া না যায় তাহলে খরচের টাকায় উঠবে না আলুতে লোকসান গুনতে হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক জানান, এবার নন্দীগ্রামে আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও শৈত্যপ্রবাহ কম হওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কৃষকদের কাছে গিয়ে আলুর ফলন বৃদ্ধি করতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।