মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ):
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বালু বোঝাই বল্কহেড থেকে ভারতীয় শাড়ি, লেহেঙ্গা, চাদরসহ বিভিন্ন বস্ত্রপণ্য আটক করেছে নৌ থানা পুলিশ ইউনিট। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকাল ৪ টার দিকে কালিপুর পাওয়ার প্লান্ট এলাকা মেঘনা নদী থেকে বল্কহেডটি আটক করে ফেরিঘাট এলাকায় নিয়ে জব্দকৃত বস্ত্রপণ্যের বস্তাগুলো উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়। এ সময় বল্কহেড সুকানিসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব নৌ-থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান। কিন্তু জব্দকৃত বস্ত্রপণ্যের বস্তাগুলো উদ্ধার করা হলেও কতগুলো বস্তা ছিলো তার সঠিক কোন তথ্য দিতে পারেনি দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক নাসির ও আব্দুল কুদ্দুস। নৌ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকালেই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীতে টহল জোরদার করা হয়। বিকাল চারটায় নৌ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নাসির উদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে কালিপুর পাওয়ার প্লান্ট এলাকার মেঘনা নদী
থেকে প্রথমে বল্কহেড আটক করা হয়। পরে ফেরিঘাট এলাকার জেটি ঘাটে তল্লাশি করে বালু বোঝাই বল্কহেডের একপাশে রাখা ভারতীয় পণ্য বোঝাই ১০০ টি বস্তা উদ্ধার করা হয়। এসময় বল্কহেডের সুকানী, সহযোগী ও চোরাচালানের সাথে জড়িত দুইজন সহ মোট চারজনকে আটক করা হয়। কিন্তু বল্কহেডটি যখন ফেরিঘাট এলাকার নিয়ে জব্দকৃত পণ্যের বস্তাগুলো থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তখন অত্র এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আমরা যখন দেখি বালুবাহি নৌকা ঘাটে ভিড়ায় তখন বস্তাগুলো থানায় নিয়ে যায় আর তখন আমরা জানতে পারি প্রায় ১৩০-১৫০টি বস্তার মতো নৌকায় ছিল। পণ্যের বস্তা খালাসকারি লেবাররা বলেন, আমরা এই নৌকা থেকে প্রায় ১৩০টি বস্তা মাল নৌ-থানায় নিয়ে যাই। এ ঘটনায় আটককৃরা হলো, বল্কহেড সুকানী বরগুনা জেলার সদর থানার ডালভাঙ্গা গ্রামের রসিদ মিয়া ছেলে রুবেল মিয়া (৩৭)
ও সহযোগী একই উপজেলার চরগাছিয়া গ্রামের সোহরাফ মিয়ার ছেলে মিজানুর রহমান (২২)৷ আটকৃত আরো দুই চোরাকারবারি হলো, সুনামগঞ্জের বালিকান্দি গ্রামের মৃত মোবারকের ছেলে কামাল মিয়া (২৫) ও একই জেলার মইনপুর গ্রামের ছাইফুল মিয়া ছেলে জিহান মিয়া (১৮)। এদিকে খবর পেয়ে বিকাল ৬টার দিকে সাংবাদিকরা নৌ থানায় গেলে কর্তব্যরত অফিসারগণ তথ্য নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেন। সাংবাদিকদের চাপের মুখে রাত সাড়ে ৭টায় থানায় প্রবেশ করতে দেয় নৌ থানা-পুলিশ৷ এ বিষয়ে বল্কহেডের সুকানী রসিদ মিয়া জানান, দুই দিন আগে ৭ হাজার টাকার বিনিময়ে সুনামগঞ্জ থেকে ভারতীয় বস্ত্রের বস্তা নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। সুনামগঞ্জ এলাকার আলাউদ্দিন মিয়া নামের এ ব্যক্তির নির্দেশেই মালামালগুলো ঢাকার মেঘনায় নিয়ে যাচ্ছিলেন বলেন তিনি জানান। তবে কতগুলো বস্তা তা
তিনি জানেননা। এ বিষয়ে চোরাচালানকারী সদস্য জিহান মিয়া জানান, চার হাজার টাকার বিনিময়ে সুনামগঞ্জ এলাকার আলাউদ্দিন মিয়ার কথায় বল্কহেডের সাথে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন তারা। ঢাকায় গেলে পণ্য বুঝে পাওয়া ব্যক্তিরা তাদের ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জে ফেরার বাসে তুলে দিবেন। এ বিষয়ে ভৈরব নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন, আনুমানিক ১০০ বস্তাসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে বস্তার মধ্যে ভারতীয় শাড়ি, লেহেঙ্গা, চাদরসহ বিভিন্ন বস্ত্র রয়েছে। বস্তা বেশি হওয়ায় পরিপূর্ণ তথ্য দিতে সময় লাগবে বলে তিনি জানান।