সাগর কুমার বাড়ই খুলনাঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ‘উইক অব ওয়েলকাম’ শীর্ষক ৫ দিনব্যাপী একাডেমিক ওরিয়েন্টেশন আজ ১০ নভেম্বর (রবিবার) শুরু হয়েছে। সকাল ৯.৩০ মিনিটে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে ওরিয়েন্টেশনের প্রথম দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, নবাগত শিক্ষার্থীদের জন্য আজকে একটি সুন্দর ও স্মরণীয় দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের পর সকলের সাথে পরিচিত হওয়া, ওরিয়েন্টেশনে রিসোর্স পারসনদের কথা মনোযোগ সহকারে শোনা- এসব স্মৃতি চিরদিন মনে গেঁথে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন হচ্ছে নিজেকে প্রস্তুত করে নেওয়ার শ্রেষ্ঠ সময়। শিক্ষার্থীদের পরবর্তী জীবনের গন্তব্য কি হবে, তা এখান থেকে নির্ধারিত হয়। এজন্য নতুন প্রজন্মের
আত্মত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতার চেতনায় নিজেকে দেশাত্ববোধ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে গড়ে উঠতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে শিক্ষা ব্যবস্থার বড় ধরনের পরিবর্তনের মুখোমুখি হয় শিক্ষার্থীরা। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়টাতে অসৎ সঙ্গের কারণে অনেকেই কাক্সিক্ষত লক্ষ্য থেকে ছিটকে যায়। এগুলো পরিহার করতে হবে। জীবনকে ধ্বংসের পথে নেওয়া যাবে না। কোনো ক্ষেত্রেই হতাশ হওয়া যাবে না। জীবনকে সুন্দরভাবে সাজাতে হবে। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে।
উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য এক বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে একই একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে সব ডিসিপ্লিনে ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া হয়। ছাত্ররাজনীতি না থাকলেও নিজেকে বিকশিত ও নেতৃত্বগুণে সমৃদ্ধ করার জন্য এখানে অনেক ক্লাব/সংগঠন রয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী যাতে র্যাগিংয়ের শিকার না হয়, সেজন্য কঠোর আইন রয়েছে। পাশাপাশি ছাত্রীরা যাতে যৌন নিপীড়নের শিকার না হয়- সেজন্য যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল রয়েছে।
উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য এক বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে একই একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে সব ডিসিপ্লিনে ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া হয়। ছাত্ররাজনীতি না থাকলেও নিজেকে বিকশিত ও নেতৃত্বগুণে সমৃদ্ধ করার জন্য এখানে অনেক ক্লাব/সংগঠন রয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী যাতে র্যাগিংয়ের শিকার না হয়, সেজন্য কঠোর আইন রয়েছে। পাশাপাশি ছাত্রীরা যাতে যৌন নিপীড়নের শিকার না হয়- সেজন্য যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল রয়েছে।
যৌন নিপীড়নে কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে বহিস্কারসহ কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, তোমরা আমাদের সন্তানতুল্য। তোমাদের যথাযথভাবে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের। তোমাদের মনে রাখতে হবে, দেশের সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় তোমরা লেখাপড়া করছো। তাদের প্রতি তোমাদের অনেক দায়বদ্ধতা রয়েছে। তোমাদের অগ্রজ তথা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি গ্রাজুয়েটরা দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সফলতার স্বাক্ষর রাখছে। সেসব কৃতি অ্যালামনাইদের পথ অনুসরণ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে তোমাদের আত্মনিয়োগ করতে হবে। এর আগে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথাগতভাবে নবাগত শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান। উক্ত শপথবাক্যে সন্ত্রাস, ছাত্ররাজনীতি, র্যাগিং ও মাদককে না বলার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশিদ খান। তিনি বলেন, একটি প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে তোমরা এখানে এসেছো। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের
কিছু মানগত পার্থক্য রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। এটা খুবই ভালো লাগার বিষয়। মনে রাখতে হবে, প্রতিযোগিতা এখন বিশ্বজনীন, এজন্য তোমাদেরও বিশ্বমানের হিসেবে নিজেদের তৈরি করতে হবে। আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ডিন (চলতি দায়িত্ব) প্রফেসর ড. আবু শামীম মোহাম্মদ আরিফ, জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ ও চারুকলা স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শেখ সিরাজুল হাকিম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. সালাউদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইকিউএসির উপ-রেজিস্ট্রার মোঃ নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনসমূহের প্রধানবৃন্দ এবং নবাগত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উপাচার্য রিসোর্স পারসন হিসেবে ‘কপিং এন্ড থ্রাইভিং ইন হায়ার এডুকেশন এনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক একটি টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপন করেন। এতে তিনি ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং দ্য ইউনিভার্সিটি এনভায়রনমেন্ট’, ‘কমিটমেন্ট’, ‘পারসোনাল এন্ড একাডেমিক গোলস’, ‘বিল্ডিং সোশ্যাল কানেকশন’, ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ এবং ‘ফিন্যান্সিয়াল সাপোর্টস’ বিষয়ে আলোকপাত করেন। এ ছাড়াও আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. শামীম আহসান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম, খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা হলের প্রভোস্ট প্রফেসর শরিফ মোহাম্মদ খান রিসোর্স পারসন হিসেবে টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে নবাগত শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন মুদ্রিত সমন্বিত প্রসপেক্টাস বিতরণ করা হয়। কর্মশালার প্রথম দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, পরিসংখ্যান, ফার্মেসী, সয়েল ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট এবং প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিনের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।