সৈয়দ জাহিদুজ্জামানঃ খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে চরমভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। অজানা ও অদৃশ্য এক আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ গৌতম কুমার পাল। ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন হাসপাতালের উপপরিচালক ডাঃ মোঃ আকতারুজ্জামান। আরও ৪১ চিকিৎসককেও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে একরকম বলা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি অংশের চাপে হাসপাতালের উপপরিচালক ডাঃ মোঃ আকতারুজ্জামান পদত্যাগ করেন। হাসপাতাল সূত্র বলছে, মঙ্গলবার খুলনা মেডিকেল কলেজের
শিক্ষার্থীদের একটি অংশ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ডাঃ আক্তারুজ্জামানকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। এ সময় আরও ৪১ জন চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দেন কার্ডিওলোজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোস্তফা কামাল। ফলে বুধবার নিরাপত্তা ঝুঁকিতে হাসপাতালে আসেননি অনেক চিকিৎসক। সরেজমিন দেখা যায়, বহিঃর্বিভাগের ২০২ নং কক্ষের প্রীতম চক্রবর্তী, ২০৯ নং কক্ষের ডাঃ হিমেল সাহা, ২০৭ নং কক্ষের ডাঃ অনিরুদ্ধ সরদার, ২০৫ নং কক্ষের ডাঃ শেখ তাসনুভা আলম, ২০৪ নং কক্ষের ডাঃ সুব্রত কুমার মন্ডল, ২০৩ নং কক্ষের আরএমও ডাঃ সুহাস রঞ্জন হালদার, ২১১ নং কক্ষের ডাঃ দীপ কুমার দাশ, ২১২ নং কক্ষের আরএমও ডাঃ সুমন রায়, ১০৩ নং কক্ষের ডাঃ তড়িৎ কান্তি ঘোষ, ৩০৮ নং কক্ষের ডাঃ নিরুপম মন্ডল, ২০৪ নং কক্ষের ডাঃ আবদুল্লাহ আল মামুন, ৪১১ নং কক্ষের ডাঃ রনি দেবনাথ তালুকদার,
৪১০ নং কক্ষের ডাঃ মিথুন কুমার পাল, ৪১২ নং কক্ষের ডাঃ জিল্লুর রহমান তরুণ, ১০৫ নং কক্ষের চিকিৎসক শিবেন্দু মিস্ত্রিসহ প্রায় ২০ জন চিকিৎসক অনুপস্থিত। নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় তারা হাসপাতালে আসেননি বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়াও আন্তঃবিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার কনসালট্যান্টসহ আরও ২১ জন চিকিৎসক অনুপস্থিত। এতে পুরো হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা সেবা না পেয়েই বাড়ি মুখে ফিরে যাচ্ছেন। বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা থেকে আসা মাসুম বিল্লাহ বলেন, বাড়ি থেকে ডাক্তার দেখাতে এসেছি সকাল ১০টার দিকে। দুপুর পার হলেও চিকিৎসক আসেননি। আমি শিক্ষকতা করি, আজ ছুটি থাকায় এসেছি। অথচ এসে ডাক্তার দেখাতে পারিনি।
শুধু আমি নই, আমার মত অন্য আরো অনেক রোগী ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালে আসা রোগী জাকিয়া জামান এ প্রতিবেদককে বলেন, ডাক্তার দেখাতে এসেছি সেই সকালে, এখনও ডাক্তার দেখাতে পারিনি। আজকে ডাক্তার দেখাতে পারিনি, আগামীকালও ডাক্তার আসবে কি না জানতে পারছি না। তাইতো খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বর্তমানে হুমকির মুখে। এ অচল অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন আনা প্রয়োজন বলে বিজ্ঞমহল অভিমত ব্যক্ত করেছেন।