সৈয়দ জাহিদুজ্জামান দিঘলিয়া খুলনা থেকে::::: দিঘলিয়ায় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জমজমাট হয়ে উঠেছে পশুর হাট। আসন্ন ঈদ-উল- আজাহার আর মাত্র ১ দিন বাকী। পশুর হাটগুলো উদ্বোধনী দিন থেকেই বেচাকেনা শুরু হয়ে গেছে। তবে গত ৩ দিন থেকে হাটগুলোতে কোরবনির পশু বিক্রি জমজমাট হয়ে উঠেছে।আজ শেষ দিনে আরো ভীড় হবে বলে ক্রেতা বিক্রেতারা মনে করছেন। আবার অনেকে শেষ দিনে পশুর বাজার মন্দা হবে এই আশায় বসে আছেন।তবে দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মাছে নানা মুখে নানা কথা বিরাজমান। খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় ঈদুল আজহা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে কোরবানির পশুর হাটও জমতে শুরু করেছে। শেষ দিন রবিবার ১৬ জুন এলাকার কয়েকটি হাট
ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতা বিক্রেতাদের সমাগমে পশুর হাটগুলি সরগরম হয়ে উঠছে। কোরবানি উপলক্ষে এ হাটগুলি দু-তিন দিন পূর্বেই উদ্বোধন হয়েছে। তবে ঈদ-উল-আযহার দিন যত ঘনিয়ে আসছে বেচাকেনা ব্যাপক জমে উঠেছে বলে জানান ক্রেতা বিক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, এবার প্রতিটি খামারেই অনেক গরু ছাগল রয়েছে। তাদের ধারণা চাহিদার চেয়ে এবার পশুর সংখ্যা বেশি। তাই এবার কোরবানির পশুর কোন সংকট হবে না। তবে খাদ্যের দাম বাড়াতে গরু ছাগল লালন পালনে খরচ বেড়েছে। এতে গত বছরের চেয়ে এবার পশুর দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশি হতে পারে। হাটে যথেষ্ট পরিমাণ ক্রেতার আগমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সর্বমহলের অভিমত এবার ক্রয়-বিক্রয় ভালো হচ্ছে। দিঘলিয়ার পথের বাজার পশুর হাট, কেটলা পশুর হাট এবং দিঘলিয়া ওয়াইএমএ ক্লাবের পশুরহাটসহ বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা যায় সারিবদ্ধভাবে রাখা কোরবানির পশুগুলো দেখতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। তবে হাটে সব ধরনের ও বিভিন্ন আকৃতির গরু, ছাগল ও দেখা যায়। গরুর চাহিদার বিষয়ে বিক্রেতারা জানান, এখনো তেমন দরদাম না হলেও যারা আসছেন তাদের মধ্যে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। বড় গরুর বিষয়ে তারা এ প্রতিবেদককে জানান, প্রতি বছরই এমনটা হয়। ছোট ও মাঝারি গরু বেশি বিক্রি হলেও বড় গরুর চাহিদা কম থাকে। আর দামের বিষয়ে তারা জানান,
এবার দাম ভালো মিলবে এবং আকারভেদে দাম বেশী কম হবে। গরু ছাড়াও উপজেলার এসব স্থায়ী অস্থায়ী পশুর হাটে খাসি ছাগলও বেশ আমদানি হয়েছে। এগুলোর দাম জানতে চাইলে দাম নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বিক্রেতারা জানান, তাদের মধ্যে অনেকেই ব্যাংক থেকে ঋণ ও ধারদেনা করে খামারে গরু ছাগল পালন করেছেন। ফলে কাঙ্খিত দামে বিক্রি করতে না পারলে ঋণের বোঝা বইতে হবে। একজন পাইকার জানান, গত বছরে যে গরুর দাম ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা ছিল এ বছর সেই গরু ৯০ থেকে ১লাখ। এভাবে গরুর আকার অনুযায়ী দামেও তফাত রয়েছে। বিক্রেতারা বলেন, সরকারের সদিচ্ছায় যেহেতু এবার পশুর হাটে ইন্ডিয়ান পশু আসতে পারে নাই তাই এবার পশুর দামও আমরা ভালো পাব বলে আশা করি। এখন ক্রেতার আগমন এবং তাদের চাহিদা বুঝে গরু ছাগলের দাম নির্ধারণ করা হবে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ফজলুল করিম বলেন, এবার দিঘলিয়া উপজেলায় গরু ছাগল রয়েছে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। তিনি বলেন,চলতি বছর এ উপজেলায় কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে প্রায় ৪ হাজার পশুর আর প্রস্তুত করেছেন ৫ হাজার ৫৫১টি পশু। যা চাহিদার চেয়ে ১ হাজার ৫৫১ টি বেশি।
দিঘলিয়া উপজেলায় কোরবানির জন্য যে পরিমাণ পশু রয়েছে তাতে চাহিদা মিটিয়ে আরো ১ হাজার ৫৫১টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। তাই এবার উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন অঞ্চলে দিঘলিয়ার খামারিদের প্রস্তুত করা পশু সরবরাহ করা সম্ভব হবে। হাটে স্থানীয় খামারিসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যাপারীরা কোরবানির পশু বিক্রির জন্য নিয়ে আসছেন। হাটে পর্যাপ্ত ক্রেতা-বিক্রেতা রয়েছে। বেচাকেনা ধীরে ধীরে বাড়ছে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, বেচাকেনাও তত বাড়ছে। হাটে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও লাইটিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিকে দুর্বৃত্তরা জাল টাকা ছড়িয়ে দিয়ে যেন সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করতে না পারে সে জন্য হাট কমিটির লোকজন ও পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও জানা যায়। হাটে আসা
পাইকারদের থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থাসহ পুলিশ প্রশাসন ও ভলান্টিয়ারের মাধ্যমে শতভাগ নিরাপত্তার নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবার পথের বাজার পশুহাটে আকর্ষণীয় দিক হলো এ হাটে ক্রেতা বিক্রতা পুরুষের পাশাপাশি মহিলাদেরও দেখা গেছে। তবে এবার সর্ব শ্রেণির অভিমত এ হাটগুলো যারা পরিচালনা করছেন বা পশুহাট বাস্তবায়ন কমিটির লোকজনের উচিৎ এবার কোন পশুহাটে কত টাকার পশু কেনাবেচা হলো এবং কত টাকার পাশ কাটা হয়েছে তা এলাকার সাধারণ মানুষের নিকট প্রকাশ্যে জানান দেওয়া। অর্জিত টাকা ব্যয়ের খাত জানার অধিকার এলাকার প্রত্যেকের জানার অধিকার রাখে এমনটায় জানিয়েছে এলাকার বিজ্ঞমহল।