সৈয়দ জাহিদুজ্জামানঃ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি শনিবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড় রিমালে রূপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দরসহ খুলনা,সাতক্ষীরা,বাগেরহাট,পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা,পটুয়াখালী এসব এলাকার অদূরবর্তী দ্বীপ এবং চর এলাকায় দশ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম বন্দরসহ ফেনী,কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষীপুর,চাঁদপুর ও চরাঞ্চলে নয় নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বিবিসি বাংলাকে বলেন, ররিবার সন্ধ্যা থেকে উপকূলে আঘাত হানা শুরু করতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে আঘাত হানতে পারে উপকূলে।
তিনি জানান, ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার গতিতে ঘূর্ণিঝড় রিমাল উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তবে এটি সুপার সাইক্লোনে পরিণত হওয়ার কোন শঙ্কা নেই। আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা করছেন, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ঘূর্নিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করতে পারে। আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই মধ্যে উপকূলীয় জেলাসমূহে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। রোববার ভোর রাত থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং থেকে দমকা হাওয়া বইছে। উপকূলীয় অঞ্চলের লোকজনকে ইতোমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হচ্ছে। এ সব এলাকায় ৮-১০ ফুট জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে আবহাওয়াবিদগণ মনে করছেন। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি মোকাবিলায় উপকূলীয় ১৬ টি জেলায় বিশেষ প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। তারা জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে স্থানীয় প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা
করছেন, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ঘূর্নিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করতে পারে। আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে ভোলাসহ উপকূলীয় অঞ্চলের জেলা ও উপজেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপকূলীয় অঞ্চলের জনগণ, জেলে ও নৌযান রক্ষায় সচেতনতামূলক মাইকিং করছে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনসহ নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যা। এমনকি লোকজনকে হাঁস-মুরগী ও গবাদী পশু সহ নিজেদের নরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়ার জন্য থেকে থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। শনিবার (২৫ মে) বেলা
১১টার দিকে ভোলার সদর উপজেলার তুলাতুলি মেঘনা নদী এলাকায় এ সচেতনতামূলক মাইকিং শুরু করে তারা। কোটগার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. এইচ এম এম হারুন অর রশিদ জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ক্রমান্বয়ে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের পক্ষ থেকে উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং, লিফলেট বিতরণের কাজ শুরু করেছেন তারা। এছাড়াও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষায় ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের নিরাপদ সাইক্লোন শেল্টারে নেওয়ার কাজও শুরু করবেন তারা।