মেহেরপুরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

মাজিদ আল মামুন মেহেরপুরঃ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, কোন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কর্তন করতে হলে প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজন হলেও তা না মেনে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার আযান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছ কর্তন ও আম বিক্রির টাকার নয়-ছয়ের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হামিজ উদ্দীনের বিরুদ্ধে। জানা যায়, দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে হামিজ উদ্দীন আযান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এসময়ের মধ্যে কয়েক দফায় বিদ্যালয়ের শিশুগাছ, ঝাউগাছ, কৃষ্ণচুড়া ও নারিকেল গাছসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ বিক্রি করেন এবং প্রতি বছর গাছের আম বিক্রি করে থাকেন। যার মধ্যে সর্বশেষ হাজার দশেক টাকার গাছ বিক্রি সম্বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবগত থাকলেও

বিগত সময়ে আরও গাছ বিক্রির বিষয়ে অবগত নয়। এদিকে টেন্ডারের মাধ্যমে এসব গাছ বিক্রি করা হয়েছে বলে দাবী করলেও প্রধান শিক্ষক এ সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
সোমবার (১৩ মে), বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সরেজমিনে আযান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত হলে, প্রধান শিক্ষক হামিজ উদ্দীন নির্বাচনের পূর্বে কোন তথ্য দিতে পারবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেন। এর পূর্বে আজ নয়, কাল তথ্য দেবো, ব্যস্ত রয়েছি, এভাবে আরও ২ দিন সাংবাদিকদের হয়রানি করা হয়। অবশেষে আবারও সোমবার বিদ্যালয়ে আসতে বললেও কোনরকম তথ্য দেননি তিনি। বিদ্যালয়ে ৭৭ জন শিক্ষার্থী থাকলেও ১২/১৩ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি পাওয়া যায়। অফিস কক্ষে গিয়ে গ্যাসের চুলায় রান্না চলা অবস্থায় দেখা মেলে। বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রি করে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে বলা

লেও জাতীয় পতাকাটা বিদ্যালয়ের এক কোনে পঁচা বাঁশে টানানো অবস্থায় দেখা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, কয়েক দফায় বিদ্যালয়ের প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন ধরনের গাছ বিক্রি করলেও তা সরকারি কোষাগারে জমা হয়নি। তাছাড়া প্রতি বছর আম বিক্রির টাকারতো কোন হদিসই নেই। হামিজ উদ্দীন দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে একই বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া অন্যান্য শিক্ষকগণও উক্ত গ্রামের এবং গ্রামের কারো না কারো আত্ত্বীয়। এটাও একটা মজার বিষয়। আরও একটি মজার বিষয় হচ্ছে, দীর্ঘ ৬ মাস পূর্বে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি বিলুপ্ত হলেও নতুনভাবে কোন কমিটি গঠন করা হয়নি।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আবুল বাশারের সাথে যোগাযোগ করা হলে, বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির ১ টি টাকাও তিনার কাছে নেই এবং তদন্ত সাপেক্ষ প্রধান শিক্ষক এ কেলেংকারিতে জড়িত থাকলে তিনাকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।
ধানখোলা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মানুষ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ করে আসছেন। গাংনী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, এলাকাবাসী এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা

নেওয়া হবে। মেহেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে এ বিষয়ে অবগত করলে সাংবাদিকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং ইতিপূর্বে অনেক অভিযোগ তিনি পেয়েছেন বলে জানান। তিনি বিদ্যালয় পরিদর্শনে গেলেও অনেকে অভিযোগ করেন এমনকি গাংনী উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ফয়সালও নানা অনিয়মের কথা জানিয়েছেন। সর্বোপরি উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হামিজ উদ্দীনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top