সৈয়দ জাহিদুজ্জামান দিঘলিয়া খুলনা থেকে::::: দেশের সকল স্থানের ন্যায় খুলনার দিঘলিয়াতেও চারদিক জ্বলছে বৈশাখের তীব্র তাপদাহে। কয়েক দিনের তীব্র তাপদাহে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ছে জনজীবন। বেশি বিপাকে পড়েছেন এ জনপদের খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। সকাল থেকেই ভ্যাপসা গরম এবং বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের প্রচন্ড তাপে সর্বত্র তীব্র উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা পড়ছেন চরম বিপাকে। খোলা আকাশের নিচে আয়ের উৎস-নির্মাণ শ্রমিক, মাটিকাটা শ্রমিক, ভ্যানচালক ও মাঠে কাজ করা কৃষক শ্রমিক গরমে হা-হুতাশ করতে দেখা গেছে। রৌদ্রের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, বাইরে কাজে বের হয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। জীবিকার তাগিদে
উপায়াস্ত না পেয়ে তীব্র রোদেই কাজে বের হতে হয় খেটে খাওয়া মানুষদের। দিনমজুর থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে অন্য সবার চেয়ে বেশি। ভ্যান চালক রাজু বলেন, বৈশাখের এই তীব্র রোদের কারণে ভ্যান চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। এত গরম যে রাস্তায় দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। গরমের কারণে মানুষ কম বের হচ্ছে। ফলে আয়-ইনকাম কমে গেছে। উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহীম বলেন, প্রচন্ড গরমে বাচ্চা নিয়ে খুবই সমস্যায় আছি। ঘরের মধ্যে গরমে থাকা যাচ্ছে না। আমার সন্তান কয়েক দিন থেকে জ্বর-সর্দি ও কাশিতে ভুগছে। প্রচন্ড রৌদ্রের তাপে নাভিশ্বাস অবস্থা। সারা দেশে তৃতীয় দফায় জারি করা হয়েছে হিট অ্যালার্ট। দেশে চলমান তাপপ্রবাহ গত সপ্তাহের শুক্রবার থেকে বর্তমান সপ্তহের শুক্রবার পর্যন্ত দুই সপ্তাহের চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে আরো ২/৩ দিন এবং তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে জানিয়ে সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার হিট এলার্ট দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে প্রচন্ড তাপদাহে পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে বাগদা চিংড়ি ব্যাপকহারে
মারা যাচ্ছে। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দিঘলিয়া মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, বাগদা চাষের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর লবণসহিষ্ণু মাত্রা হলো সর্বোচ্চ ২৫ পার্টস পার থাউস্যান্ড (পিপিটি)। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে পরিবেশের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। পাশাপাশি চিংড়ি চাষের জন্য যে পরিমাণ পানির প্রয়োজন তা ঘেরগুলোতে নেই। এ কারণে লবণাক্ততা বেড়ে গিয়ে গরমের কারণে বাগদা চিংড়ি মারা যাচ্ছে। দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাহবুবুল আলম বলেন, এই গরমে অপ্রোয়জনে বাইরে ঘোরাঘুরি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যারা কাজের জন্য বাইরে থাকেন, তাদের ছাতা ব্যবহার বা মাথায় কাপড় দিতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস রোগীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। কারণ এসব রোগীর হিটস্ট্রোকের ঝুঁঁকি সবচেয়ে বেশি। তীব্র গরমে পানিশূন্যতা কিংবা হিটস্ট্রোক এড়াতে শ্রমজীবীদের একটানা কাজ না করে বিশ্রাম নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।