যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন যে কারণে বড়দিন

IMG_20231225_140920-scaled.jpg

মোছাঃ তাওহীদা ইসলাম তন্নী নাটোরঃ বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌর শহর এলাকায় যথাযথ মর্যাদায় উৎযাপিত হচ্ছে বড় দিন। রোজ সমবার ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩। যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন যে কারণে বড়দিন
২৫ ডিসেম্বর দিনটি বড়দিন হিসেবে পালন করা হয়। খ্রিষ্টানরা নানাভাবে বড়দিন উদযাপন করে থাকেন। এগুলোর মধ্যে বর্তমানে গির্জার উপাসনায় যোগ দেওয়া সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অন্যতম জনপ্রিয় প্রথা। এছাড়াও রয়েছে অন্যান্য বিভিন্ন উপাসনা পদ্ধতি ও জনপ্রিয় রীতিনীতি। বড়দিনের আগে যিশুর জন্ম উৎসব উপলক্ষে ইস্টার্ন অর্থোডক্স চার্চ নেটিভিটি উপবাস পালন করে থাকেন। অন্যদিকে পাশ্চাত্য খ্রিষ্টধর্মে অধিকাংশ চার্চে অ্যাডভেন্ট পালন করা হয়। বড়দিনের সর্বশেষ প্রস্তুতিটি নেওয়া হয় বড়দিনের আগের সন্ধ্যায়।

বড়দিন উৎসব পর্বের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ঘর সাজানো এবং উপহার আদান-প্রদান। কোনো কোনো খ্রিষ্টীয় শাখা সম্প্রদায়ে ছোটো ছেলেমেয়েদের দ্বারা খ্রিষ্টের জন্মসংক্রান্ত নাটক অভিনয় এবং ক্যারোল গাওয়ার প্রথা আছে। আবার খ্রিষ্টানদের কেউ কেউ তাদের ঘরে পুতুল সাজিয়ে খ্রিষ্টের জন্মদৃশ্যের ছোটো প্রদর্শনী করে থাকেন। এই দৃশ্যকে নেটিভিটি দৃশ্য বা ক্রিব বলে। এই ধরনের প্রদর্শনী উৎসবের মুখ্য আকর্ষণ হয়ে ওঠে। কোথাও কোথাও লাইভ নেটিভিটি দৃশ্য ও ট্যাবলো ভাইভ্যান্টও অনুষ্ঠিত হয়; এই জাতীয় অনুষ্ঠানে অভিনেতা ও জন্তুজানোয়ারের সাহায্যে যিশুর জন্মদৃশ্যের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়ে থাকে। যিশুর জন্মদিনটি বড় দিন হিসেবে পালন করা হয়। যিশু পৃথিবীর বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য ধর্ম ও দর্শন দিয়ে গেছেন। বিশ্বব্যাপী বিশাল অংশের মানুষ তার ধর্ম ও দর্শনের অনুসারী।

যিনি এতো বড় ধর্ম ও দর্শন দিয়েছেন ২৫শে ডিসেম্বর তার জন্মদিন। যিশুর জন্মগ্রহণের দিনটিই তার অনুসারীদের কাছে বড় বিষ্ময়ের। এই দিনটিকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর নিয়ম-কানুন, আচার অনুষ্ঠানে অনেক কিছু যোগ হয়েছে। সে কারণেই এটিকে বড়দিন হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ।
খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষের বিশ্বাস করেন যিশু খ্রিস্ট মানুষ রূপে পৃথিবীতে এসেছিলেন। তিনি সব পাপ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে এবং মানবিক বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে ধর্ম প্রবর্তন করেছিলেন। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ক্রিসমাস বা বড় দিন। এই দিনে খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশু খ্রিস্ট বেথলেহেম নগরীতে অলৌকিকভাবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

অনুমান করা হয়, ক্যাথলিক রাজা কনস্ট্যানটাইনের সময়ে ৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বড়দিন পালন করা হয়। এর কয়েক বছর পর পোপ জুলিয়াস ঘোষণা করেন, ২৫ ডিসেম্বর উদযাপন হবে বড়দিন হিসেবে। বড়দিন ঘিরে দ্বিমত রয়েছে জুলিয়ান ও গ্রেগরিয়ান দিনপঞ্জিতেও। অনেক অর্থোডক্স ও কপ্টিক চার্চ এখনও গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের বদলে জুলিয়ান দিনপঞ্জি অনুসারে ৭ জানুয়ারি বড়দিন পালন করে থাকেন। আঠারো ও উনিশ শতকে ইউরোপীয়রা বাংলা অঞ্চলে খ্রিস্ট ধর্ম প্রচার করেন। যারা ধর্মটি গ্রহণ করেছেন তাদের কাছে এটি আরও মহিমান্বিত বিষয়। বাঙালি যারা খ্রিস্টান তাদের অধিকাংশই এই ধর্মে রুপান্তিরিত হয়েছেন। বড় দিনটি উৎসবরূপে বাঙালি সমাজে আঠার শতকের শেষের দিকে উদযাপন শুরু হয়। এই অঞ্চলের মানুষ ইউরোপীয়দের অনুকরণে ২৫ ডিসেম্বর যিশুর জন্মদিন পালন শুরু করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *