হাকিকুল ইসলাম খোকন,সিনিয়র প্রতিনিধিঃ ব্রাসিলিয়াস্হ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস-২০২৩। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবস পালনের সূচনা করেন রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা। মহান মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ নিহত সকল বুদ্ধিজীবী এবং স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের সকল শহিদ সদস্যদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শহিদ বুদ্ধিজীবি দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বিশেষ বাণী পাঠ করেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা। বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্যকে প্রতিপাদ্য করে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।খবর বাপসনিউজ ।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন দেশের সেই সূর্য সন্তানদের, বিজয়ের অন্তিম মুহূর্তে যাদের হারিয়ে বাংলাদেশ আজো শোকে বিহবল। রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ স্মরণ করে বাঙালি জাতির অভ্যুদয়ে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিস্মরণীয় অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন সত্ত্বা। বঙ্গবন্ধু সারা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের পক্ষে সর্বদাই সোচ্চার ছিলেন। তিনি ছিলেন শান্তিকামী। রাষ্ট্রদূত আরও বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাংলাদেশের নন, তিনি ছিলেন সকল শোষিত মানুষের নেতা। স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু হয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকান্ডকে ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাকান্ড হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বিলম্বে হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃঢ় নেতৃত্বে ঘৃণিত হত্যাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসা বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনী এবং যুদ্ধাপরাধীদের প্রত্যেকের সাজা কার্যকর করার জোর দাবি জানান।৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ ভূমিকার কারণেই বাঙ্গালি জাতি আজ একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছে। রাষ্ট্রদূত বলেন পাক হানাদার ও তাদের এদেশের দোসর কর্তৃক বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড ছিল বাঙালি জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি ও বাঙালী জাতিকে মেধাশূণ্য করার জঘন্যতম প্রয়াস ।
একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য বঙ্গবন্ধু কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষপের প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন মাত্র তিন বছরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে বিশ্বাঙ্গনে একটি সম্মানিত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। এবং বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। রাষ্ট্রদূত ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও জ্ঞান নির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বর্তমান প্রজন্মকে আত্মপ্রত্যয়ী ও সততার সাথে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানান।
স্বাধীনতার অব্যহিত পরই দক্ষিণ আমেরিকার মাঝে সর্বপ্রথম ব্রাজিল বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করায় রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে ব্রাজিল সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ভাষা আন্দোলনসহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকল আত্মত্যাগকারী, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদ এবং বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগষ্টের নির্মম হত্যাকান্ডে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহিদ-এর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে আয়োজনের সমাপ্তি করা হয়।