ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও নিজ প্রয়োজন মেটানোর তাগিদে সরিষা চাষে ঝুঁকছেন দিঘলিয়ার চাষিরা

IMG_20231210_121108.jpg

সৈয়দ জাহিদুজ্জামান দিঘলিয়া খুলনাঃ দিঘলিয়াসহ সারা দেশে সোয়াবিন জাতীয় তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে নিজ প্রয়োজন মিটিয়ে আর্থিকভাবে লাভের আশায় খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকেরা সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়ছে। সরকারি সুযোগ-সুবিধা বাড়লে সরিষাসহ সকল ভোজ্য তেলের ফসলের আবাদ বাড়বে বলে কৃষকদের অভিমত। সরেজমিনে দিঘলিয়ার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা মেলে সরিষা ফুলের হলুদের সমারোহ। পাশাপাশি সরিষা ফুলের মিষ্টি গন্ধ ও সরিষা ক্ষেতে মৌমাছির গুনগুন শব্দ। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মৌসুমে কৃযকদের মাঝে উপজেলা কৃষি অফিস কর্তৃক সার-বীজ প্রণোদনা স্বরূপ বিতরণ করায় এ বছর সরিষা চাষ বেড়েছে। দিঘলিয়া উপজেলায় যে সব জমি আমন ধান কাটার পর বোরো ধান চাষের জন্য ফেলে রাখা হতো সে সব জমিতে এবার সরিষা ফুলের হলুদের সমারোহ। এবার সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকদের মাঝে আনন্দের হাসি।

এবার দিঘলিয়া উপজেলায় অনেক পতিত জমি সরিষা চাষের আওতায় আনা হয়েছে। সরিষার ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের ফরমাইশখানা গ্রামের কৃষক মোল্লা রাকিবুল ইসলাম,সেনহাটি গ্রামের কৃষক খান আবু সাঈদ, কাঞ্চন দত্ত, বিশ্বজিৎ কুণ্ডু, দিঘলিয়া গ্রামের কৃষক মোঃ রিজাউল ইসলাম ও মোঃ শফিকুল মোল্লা জানান, কয়েক বছর আগেও তাদের যে জমি পতিত থাকতো বর্তমানে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় সে সব জমিতে তাঁরা সরিষা চাষে ঝুঁকেছেন। দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ কিশোর আহমেদ বলেন, বারি-১৪ জাতের সরিষার ফলন বেশী, সময়ও কম লাগে। এতে করে এ সব জমিতে সরিষা উঠিয়ে সহজেই বোরো ধান চাষ করা যায়। আর তখন সারও কম প্রয়োগ করা লাগে। জমিতে হালকা চাষ দিয়েও বীজ বপন করা যায়, আবার চাষ না দিয়েও ভেজা জমিতে বীজ বোনা যায়। শীত মৌসুমে কীটনাশক ব্যবহার না করলেও অসুবিধা হয় না। সরিষা চাষে জমিতে দস্তা,জীপসাম, বোরন, পটাশ, ইউরিয়া ও ডিএপি সার প্রয়োগ করতে হয়। দিঘলিয়া উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার কামরুল হাসান মাহমুদ, কামাল হোসেন ও সাগর সরকার এ প্রতিবেদককে জানান, চলতি বছরে দিঘলিয়া উপজেলায় সরিষা

চাষে অনুকূল পরিবেশ ও কৃষকদের অাগ্রহের কারণে সরিষার চাষ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। অনেক জমিতে সরিষা বোপন করার পর জমি নিচু হওয়ায় পানি আটকে বীজ নষ্ট হয়ে যেত। সে সকল জমি এবার পানি শূণ্য হয়েছে। উঁচু জমিতে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকেরা। দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ কিশোর আহমেদ এ প্রতিবেদককে জানান, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচীর অংশ হিসেবে দেশে ভোজ্য তেলের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে আমরা কৃষকদের সরিষা চাষে নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করছি। তিনি বলেন চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় দ্বগুন জমি অর্থাৎ ৭৫হেক্টর থেকে ১০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরে চাষের পরিমাণ দ্বিগুনের চেয়ে বেশী। আগামী বছর সরিষা চাষ বাড়তে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরও জানান, চলতি মৌসুমে সরিষা চাষে প্রণোদনার আওতায় উপজেলার ১ হাজার ২০০ জন কৃষককে মাথা প্রতি ১ কেজি সরিষা বীজ, ১০ কেজি পটাশ ও ১০ কেজি করে ডিএপি সার বিতরণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top