হিলিতে দুদিনে কেজিতে ৬০ টাকা বেড়েছে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম

IMG_20231030_185326-scaled.jpg

নুরুজ্জামান হোসেন হিলিঃ দুর্গাপূজাতে টানা ৭ দিন আমদানি বন্ধ থাকা, ভারতে দাম বৃদ্ধি ও নতুন করে ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো চাহিদা মতো এলসি (লেটার অফ ক্রেডিট) না দেওয়ার প্রভাব পড়েছে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজের বাজারে। দুদিনের ব্যবধানে কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বন্দরে পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে।এদিকে হঠাৎ বন্দরে দাম বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছেন পাইকার ও কমিশন ব্যবসায়ীরা। এদিকে পেঁয়াজের রফতানি মূল্য বাড়িয়েছে ভারত সরকার। প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের রফতানি মূল্য নূন্যতম ৮ শ’ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গতকাল রোববার থেকেই হিলি বন্দরে কার্যকর শুরু হয়েছে। এর আগে ভারত থেকে প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজ ২৫০ থেকে ৩ শ মার্কিন ডলারে

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি হতো। গত শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাতে ওই সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়ে হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে। ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক সন্তোষ কুমার সারঞ্জি স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে নূন্যতম রপ্তানি মূল্য নির্ধারণের সেই নির্দেশনা জারি করা হয়। রোববার (২৯ অক্টোবর) থেকেই ওই নির্দেশনা কার্যকর করা হয়েছে। এখন থেকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজ নূন্যতম ৮ শ মার্কিন ডলারে রপ্তানি করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে ওই পত্রে। ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্খা হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকদের।
আজ সোমবার হিলি স্থলবন্দর ঘুরে দেখা যায়, পূজার ছুটি পর বৃহস্পতিবার হিলি স্থলবন্দরে আমদানিকরা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। সেই পেঁয়াজ শনিবার বন্দরে বিক্রি হয়েছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে আর গতকাল রোববার সেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। হিলি স্থলবন্দরের কয়েকজন কমিশন ব্যবসায়ীরা জানান, হিলিতে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। দাম বাড়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি। ৬০ টাকার পেঁয়াজ এখন কিনতে হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা দিয়ে।

ক্ষেতলাল থেকে পাইকারী পেঁয়াজ কিনতে আসা বাবু বলেন,পেঁয়াজের দাম দফায় দফায় বাড়ার কারণে আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। প্রতি ট্রাকে ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি পেঁয়াজ আমদানিকারক হারুন উর রশীদ হারুন জানান, ভারতের এই সিদ্ধান্তের কারণে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে। ভারতে বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে পেঁয়াজের ক্ষেত অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেকারণে গত কয়েকদিন ধরেই ভারতের মোকামগুলোতে পেঁয়াজের দাম উর্ধমূখী। ২৫ টাকা (রুপি) কেজি দরের পেঁয়াজ এখন কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকা (রুপি) কেজি দরে। এতে করে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে প্রতিকেজিতে খরচ পড়বে ৮৮ টাকা। আমরা যে এলসি

দিয়েছি সেই এলসিগুলো বর্তমান বাতিল করতে হচ্ছে। নতুন করে এলসি করার পরিকল্পনা আমরা করছি। কিন্ত ব্যাংকগুলো ডলার সংকটের অজুহাতে নতুন এলসি খুলছে না। ব্যাংকগুলো এলসি না দেয় বা সরকার যদি ব্যাংক কর্তৃপক্ষে নিদের্শনা না দেয় তাহলে পেঁয়াজের বাজার আরও বাড়াবে। আর যদি ব্যাংকগুলো কোন অজুহাত না দিয়ে আমদানিকারকদের নতুন করে এলসি দিলে আমরা শুধু ভারত নয় অন্যান্য দেশ থেকেও পেঁয়াজ আমদানি করা সম্ভব হবে। পূজার ছুটির মধ্যে প্রতিকেজি পেঁয়াজ পাইকারি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে,রোববার (২৯ অক্টোবর) হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের চার প্রদেশ (ইন্দোর, সাউথ, নাসিক ও নগর রাষ্ট্র) থেকে ১৫ ট্রাকে ৩৮৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top