খন্দকার ছদরুজ্জামান,নড়াইলঃ:নড়াইলের লোহাগড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে চাকরি করবার অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা যায় যে, লোহাগড়া উপজেলার পাংখারচর গ্রামের শফিকুর রহমানের মেয়ে উমাইরা খানম ২০০৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর এস পি এল বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা পদে নিয়োগ পান। নিয়োগপত্র প্রাপ্তির দিনই উমাইরা খানম যোগদান করেন। স্মারক নং এস পি এল/বে প্রা/ নিয়োগ ২৮-১২-২০০৮। ২০১৩ সালে ওই বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ হয়। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়টি ১৫৯ নং এস পি এল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।অভিযোগ রয়েছে ওই বিদ্যালয়টি বেসরকারি থাকাকালীন ওই সহকারী শিক্ষিকার নাম উমাইরা খানম থাকলেও বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ হবার পর নাম বদলে হয়েছে ফাতেমা খানম। ওই বিদ্যালয়ে
ভিন্ন ভিন্ন নামে দুইটি শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯১ সালে এসএসসি সার্টিফিকেটের নাম ফাতেমা খানম। ঢাকা বোর্ড,রোল-নং-৩৬৩৫৯।নিবন্ধন সংখ্যা – ১০৪৬৮৫/১৯৮৯।আবার ২০০৫ সালের দাখিল পাশের সার্টিফিকেটে নাম উমাইরা খানম। ঢাকা বোর্ড-রোল-নং-১১৩৩৮৬।রেজিস্ট্রেশন নাম্বার – ৬৭৮০৩৭/২০০৩। এ বিষয়ে এলাকাবাসী আরও বলেন এক ব্যক্তি দুই নামে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুইটি সার্টিফিকেটে ভিন্ন ভিন্ন নাম দেখিয়ে কিভাবে চাকরি করে? দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান ওই এলাকার সচেতন মহল। এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি তারা মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি সভাপতি থাকাকালীন সময়ে চারজন শিক্ষক -শিক্ষিকাকে নিয়োগ দিয়েছি ,তারা হলেন, মো: ইকালজ আলী চৌধুরী প্রধান শিক্ষক, মোসা:উমাইরা খানম সহশিক্ষক,মোসা:চম্পা খানম সহশিক্ষক,মোল্যা সোহেল রানা সহশিক্ষক। এ ব্যতীত অন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইকলাজ আলী চৌধুরী সহ সহকারী শিক্ষক মোল্যা সোহেল রানা ও চম্পা খানম বলেন, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠানকালীন সময়ে আমরা তিন জন সহ মোসা: উমাইরা খানম ২৮/১২/২০০৮ সাথে যোগদান করি একসাথে। আমরাই ৪ জন কর্মরত রয়েছি ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। এর মধ্যে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিতু বিশ্বাস নামে নতুন একজন শিক্ষিকা যোগদান করেছেন। কিন্তু উমাইরা খানমের বদলে ফাতেমা খানম আসলো কি ভাবে আমরা জানি না।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি কাজী গফফার হোসেন ১৫/১০/২০১৮ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খুলনা বিভাগীয় অফিস বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগে উল্লেখ করেন একই শিক্ষক দুই নামে চাকরি করা প্রসঙ্গে। উমাইরা খানম নামে শিক্ষক ২৮/১২/২০০৮ সালে এস পি এল স্কুলে যোগদান করেন।দীর্ঘদিন হাজিরা খাতায় উমাইরা খানম নামে স্বাক্ষর দিয়ে আসেন।কিন্তু ২০১৩ সালের উমাইরা খানম নাম পরিবর্তন করে ফাতেমা খানম নামে স্বাক্ষর করে। এ বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খুলনা বিভাগীয় কর্মকর্তাদের খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান সাবেক সভাপতি । এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির ওই শিক্ষিকার সাথে সাংবাদিকেরা কথা বলতে চাইলে, তিনি উগ্র মেজাজে বলেন আপনাদের সাথে আমি কথা বলতে চাই না । এ বিষয় উপজেলা প্রাথমিক
শিক্ষা অফিসার জানান,আমি লোহাগড়া উপজেলায় নতুন এসেছি । ১৫৯ নং এই এস পি এল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোন অভিযোগ এখনো পাইনি। পেলে তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।