স্বাধীনতার ৫২ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি মুক্তিযোদ্ধা আক্তারুজ্জামান সড়কটি

পীরজাদা মাসুদ হোসাইনঃ লক্ষ্মীপুরঃ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের চন্ডিপুর ইউনিয়নের মাসিমপুর বাজার থেকে ফোরকানিয়া খালপাড় পর্যন্ত ৭০০ মিটার কাঁচা সড়ক। সড়কটি পাকা হবে এই আশায় এলাকাবাসী দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বছরের পর বছর অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু বারবার জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্তারুজ্জামান সড়কটি পাকা হয়নি আজও। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুলগামী শিক্ষার্থী, নারী ও বৃদ্ধাসহ হাজারো মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সড়কটি কাঁচা হওয়ায় কেউ অসুস্থ হলে অনেক কষ্ট করে তাকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিতে হয়।

স্থানীয়রা জানান, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকেই রাস্তাটি কাঁচা। মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বগাঁথা অবদানের জন্য স্বাধীনতার পর সড়কটি নামকরণ করা হয় এলাকার কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্তারুজ্জামান নামে। তার জীবদ্দশায় সড়কটি পাকা দেখে যেতে পারেননি তিনি। বর্তমানে বর্ষার সময় একটু বৃষ্টিতেই সড়কটি কাদা-পানিতে চলাচলের অনূপযোগী হয়ে পড়ে। রিকশা, ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল চলাচলও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। পায়ে হেঁটে চলতে গিয়েও কষ্টের শিকার হন এলাকাবাসী। বিকল্প কোনো সড়ক না থাকায় গ্রামবাসী বাধ্য হয়ে কাদা-পানি মাড়িয়ে সড়কে চলাচল করেন।
তাজুল ইসলাম নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা বহু আশা করেছি আমাদের রাস্তাটি পাকা হবে। বর্ষার সময় বাচ্চারা স্কুল-মাদ্রাসায় যেতে পারে না। বৃষ্টি হলে এক হাঁটু-পানি হয়। আমরা ঘর থেকে বের হতে পারি না। চিকিৎসার জন্য পাশে থাকা কমিউনিটি ক্লিনিকেও যাওয়া সম্ভব হয় না।’

স্থানীয় এমরান হোসেন নামে আরেক জন বলেন, ‘এই রাস্তার বয়স ৬০-৭০ বছর। একজন মুক্তিযোদ্ধার নামে সড়কটির নামকরণ করা হয়েছে। বর্ষার সময় মানুষ হাঁটতে পারে না, চলতে পারে না। কেউ অসুস্থ হলে একটা অ্যাম্বুলেন্স যে প্রবেশ করবে তার ব্যবস্থা নেই। গ্রামবাসী চাঁদা তুলে রাস্তার সংস্কার করি।’ স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুল কবির বলেন, ‘আমরা কাঁচা রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। বর্ষা হলে কাদা-পানি জমে থাকে। রিকশায় করে চলাচল করা যায় না। এমনকি এক বস্তা চালও বাড়িতে নেওয়া সম্ভব হয় না। বিষয়টি একাধিকবার পরিষদে বলেও কাজ হয়নি।’

চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সামছুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘রাস্তাটি অনেক পুরনো। অনেক দুর্ভোগ হচ্ছে। গত বছর রাস্তাটির নামে আইডি করা হয়েছে। আমি এ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি পাকা করার চেষ্টা করছি।’রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির কাজ হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গ্রাম হচ্ছে শহর। এই উন্নয়ন গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে আছে। রাস্তাটি দ্রুত পাকাকরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top