সেলিম মাহবুব, ছাতকঃ প্রবাসীদের অর্থায়নে পরিচালিত ছাতকের মোগলগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার প্রচার করার প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সভা করেছে বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও এলাকাবাসী। বিদ্যালয়ের আনুসাঙ্গিক খরচ বহনে অভিভাবক ও পরিচালকদের মতামতের ভিত্তিতে রেজিষ্ট্রেশন ফি’র সাথে বাড়তি টাকা নেয়ার বিষয়টিকে কতিপয় ব্যক্তি অপপ্রচারে লিপ্ত হয়। এতে বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে বলে এলাকাবাসী সভা করে এর প্রতিবাদ জানান। শুক্রবার বিকেলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতির বক্তব্যে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত মোগলগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলাকার বাসিন্দা যুক্তরাজ্য আব্দুল গাফফার, মাসুক মিয়া ও আব্দুস ছাত্তারের অর্থায়নে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছে। দু বছর ধরে আব্দুস ছাত্তার বিদ্যালয়ে অর্থ দেয়া বন্ধ করে দিলে বিদ্যালয়টি কিছুটা অর্থ সংকটে পড়ে।
বোর্ড কর্তৃক নির্ধাতি ফি ছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন ধরনের বেতন বা ফি না নিয়েই এ বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলে আসছিল। ২০২২ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয়ের আনুসাঙ্গিক ব্যয় বহন করতে সম্প্রতি দাতা ও এলাকাবাসীর মতামতের ভিত্তিতেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রেজিষ্ট্রেশন ফি’র সাথে আরো ২০০ টাকা করে বাড়তি নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ বিষয়টিকে পুঁজি করে একটি মহল বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠে এবং অসত্য তথ্য প্রচার করতে থাকে। প্রধান শিক্ষক নজবুল হক বলেন, উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের কপলা গ্রামে প্রতিষ্ঠিত মোগলগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনি যোগদান করেন ২০২২ সালের জানুয়ারীতে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি নিয়ে এখানে দুটি পক্ষের মধ্যে সুপ্ত বিরোধ রয়েছে। তিনি কোন পক্ষের হয়ে কাজ করছেন না। বর্তমানে একটি এডহক কমিটির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে। বিদ্যালয়ের আয়ের কোন উৎস না থাকায় প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম নিয়মিত পরিচালনা করতে অর্থ সংকটে পড়তে হয় প্রতিষ্ঠান প্রধানকে। প্রবাসী দাতাগণ প্রধান সহ ৪ শিক্ষকের বেতন-ভাতা দিয়ে থাকেন। কিন্ত প্রতিদিনের প্রাতিষ্ঠানিক খরচ, প্রাতিষ্ঠানি কাজে উপজেলা ও জেলা সদরে আসা-যাওয়ার খরচ সহ বিভিন্ন ব্যয় বহন করা অনেকটাই দুরুহ হয়ে পড়ে।
বিষয়টি জেনে সম্প্রতি প্রবাসী দাতা ও এলাকার অভিভাবকদের সম্মতিতেই সম্প্রতি ৮ম ও ৯ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রেজিষ্ট্রেন ফি’র সাথে বাড়তি আরো ২০০ টাকা যুক্ত করে ৪৫০ ও ৫০০ টাকা করে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ হারে মাত্র কয়েকজন শিক্ষার্থী রেজিষ্ট্রেশন ফি দিয়েলেও অনেকেই শুধুমাত্র ১৫০, ২০০ টাকা করে দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করেছে। ফি কমবেশীর জন্য কোন শিক্ষার্থীকেই তিনি ফিরিয়ে দেননি। কিন্তু এ বিষয়টি কে বা কারা বিকৃতভাবে অপপ্রচার করে বিদ্যালয় ও তার ভাবমুর্ত্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করেছে। বিগত এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ ফলাফল অর্জনকারী মোগলগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের সাফল্য ও অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে এলাকার সকলকে বিভেদ ভুলে বিদ্যালয়ের স্বার্থে এক হয়ে সহযোগিতা করার আহবান জানান তিনি। বক্তব্য রাখেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ইমান আলী, প্রবাসী দাতাদের নিয়োজিত কোষাধ্যক্ষ আব্দুল বারী, এডহক কমিটির সদস্য আরজু মিয়া, অভিভাবক আব্দুল করিম, মঈন উদ্দিন, আরিজ মিয়া, রশিক মিয়া, ওয়ারিছ আলী, ওয়াহাব আলী, সমুজ মিয়া, ওসাব আলী, মুজিবুর রহমান, আকিজ আলী, ফয়জুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সামছুল ইসলাম, আব্দুল আহাদ, আরজু মিয়া, আলকাছ আলী, ইছহাক আলী, আব্দুর রউফ, আসকর আলী, সিরাজ মিয়া, দেবনাথ, আলী হোসেন প্রমুখ।