ভারতে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে গৃহবধূকে পাচারকালে সংঘবন্ধ মাবন পাচারকারি চক্রের ভারতীয় নাগরিকসহ দুই নারী সদস্য আটক

খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধিঃ ভারতে মোটা অংকের টাকার চাকুরীরি প্রলোভন দেখিয়ে খুলনার খানজাহান আলী থানাধিন ফুলবাড়ীগেট এলাকার এক গৃহবধু(১৯)কে ঝিনাইদাহের মহেশপুর সিমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারকালে খানজাহান আলী থানা পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে। এ সময় সংঘবন্ধ মানব পাচারকারি চক্রের সদস্য ভারতীয় এক নাগরিক শেখ জাবেদ(৩৫),দিঘলিয়া থানার হাজিগ্রামের হায়াত লষ্করের কন্যা সোনিয়া খাতুন(২৩) এবং একই গ্রামের নুর ইসলামের কন্যা কুলসুম বেগম(২৫)কে পুলিশ আটক করেছে। এ ঘটনায় ভিকটিমের ফুফু খানজাহান আলী থানায় ছয়জনকে আসামী করে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেছে। পুলিশ ও মামলার এজাহার সুত্রে জানাগেছে, খানজাহান আলী থানাধিন ফুলবাড়ীগেট এলাকার মোড়র আব্দুস সাত্তারের বাড়ীর ভাড়াটিয়া অসচ্ছল এক গৃহবধুর সাথে তারই সম্পর্কের এক খালা শাশুড়ী দিঘলিয়া থানার হাজিগ্রমের হায়াত লষ্করের কন্যা সোনিয়া খাতুনের সাথে পরিচয়ে হয়। পরিচয় সুত্র ধরে ঐ গৃহবধুর পারিবারিক অসচ্ছলতার সুযোগ নিয়ে সোনিয়া খাতুন তাকে ভারতে মোটা অংকের বেতনের চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে আসছিল।

গত ২৪ আগস্ট ঐ গৃহবধুকে তার শাশুড়ী বাড়ীতে খুজে না পেয়ে সম্ভাব্য সকল স্থানে খুজে না পেয়ে রাতেই খানজাহান আলী থানা একটি সাধারণ ডায়রী করে। পরবর্তিতে ভিকটিম গৃহবধু তার পিতার মোবাইল ফোনে কল করে জানায় সে ভালো আছে তাকে যেন না খুজি। বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলে তিনি জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো. ইসতিয়াক আহমেদকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। উর্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশ পেয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিমের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে। পরবর্তিতে মোবাইল ট্রকিংয়ের মাধ্যমে দিঘলিয়ার হাজি গ্রামের একটি সুত্র খুজে পায় পুলিশ। খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন খানের নির্দেশনায় এস আই ইসতিয়াক আহমেদ, এস্আই দোলা দে এবং এ এস আই নিতিশ বিশ^াস সঙ্গী ফোর্স নিয়ে ২৫ আগস্ট রাত সোয়া ১টায় উদ্ধার অভিযানে বেরিয়ে পড়ে। অভিযানিক টিম দিঘলিয়া থানা পুলিশের সহায়তায় হাজিগ্রামের নুর ইসলামের বাড়ীতে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় ঐ বাসায় অবস্থান করা শেখ জাবেদ(৩৫) নামের ভারতীয় এক নাগরিক এবং নুর ইসলামের কন্যা কুলসুম বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে জানায় সোনিয়া ভিকটিম গৃহবধুকে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ঝিনাইদাহের মহেশপুরের মাটালি গ্রামের মো. সামাদের বাসায় নিয়ে গেছে। সেখান থেকে সামাদের সহায়তায় পার্শবর্তি বর্ডার দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পাচার করা হবে ভিকটিম ঐ গৃহবধুকে। রাতেই কুলসুম বেগমকে সাথে নিয়ে খানজাহান আলী থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম ঝিনাইদাহের মহেশপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। মহেশপুর থানা পুলিশের সহায়তায় খানজাহান আলী থানা পুলিশ ২৫ আগস্ট সকাল ১১টায় ভারতের সিমান্তবর্তি মহেশপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিম গৃহবধু(১৯)কে উদ্ধার করে।

এ সময় পুলিশ সোনিয়া খাতুনকে আটক করে মহেশপুর থানায় আনা হয় পরে রাতে তাদেরকে খূলনার খানজাহান আলী থানায় নিয়ে আসা হয়। খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামাাল হোসেন খান বলেন, মমতাজ বেগম নামের এক ব্যক্তির ভাইজি নিখোঁজ এমন একটি জিডির অনুসন্ধানে নামে থানা পুলিশ। তথ্য প্রযক্তির সুত্র ও সোর্সের মাধ্যেমে আমরা জানতে পারি ঐ গৃহবধুকে ভারতে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে সিমান্তবর্তি ঝিনাইদাহের মহেশপুর থানার মাটালি গ্রামের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য নিশ্চিত হয়ে দ্রুত খানজাহান আলী থানা পুলিশের একটি চৌকস টিমকে মহেশপুর উদ্ধার অভিযানে পাঠানো হয়। সেখানে সিমান্তবর্তি নদী পার করে ভারতে পাচারকালে মহেশপুর থানা পুলিশের সহায়তায় খানজাহান আলী থানা পুলিশ ভিকটিম গৃহবধুকে উদ্ধার করে। এ সময় খুলনার দিঘলিয়া থানার হাজিগ্রামের হায়াত লষ্করের কন্যা সোনিয়া খাতুনকে আটক করা হয়। ওসি কামাল হোসেন খান আরো জানায়, এই ঘটনায় আমরা এ পর্যন্ত দিঘলিয়া থানার হাজিগ্রামের হায়াত লষ্করের কন্যা সোনিয়া খাতুন(২৩), ভারতের বেঙ্গলোর মুনিরাবাদ গ্রামের ওলি’র পুত্র শেখ জাবেদ(৩৫) এবং সিমান্তবর্তি ঝিনাইদাহের মহেশপুর মাটালি গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর পুত্র সামাদ(৩৫)কে আটক করেছি। ভিকটিমের ফুফু বাদী হয়ে ৬জনকে আসামী করে ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ৬/৭/৮ ধারায় খানজাহান আলী থানায় মামলা করেছে(মামলা নং ১৬, তাং -২৫/৮/২৩)। মামলার বাকী আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য দৌলতপুর থানার মানবপাচার একটি মামলার তিন আসামীকে খানজাহান আলী থানা পুলিশ আটরার শেখ পাড়া থেকে আটক করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top