সৈয়দ জাহিদুজ্জামান দিঘলিয়া খুলনাঃ খুলনা সড়কের নির্বাহী প্রকৌশলীর বেঁধে দেওয়া সাত দিনের সময় শেষ হওয়ার পরও রেলিগেট- নগর ঘাট ফেরিঘাটে চলছে চাঁদাবাজি। সড়কের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান মাসুদের বেঁধে দেয়া নির্দেশ মানছে না ফেরিঘাটের ঠিকাদার মোল্লা ফিরোজ হোসেন। ঠিকাদারের স্বেচ্ছাচারিতা ও সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তার নির্দেশনার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন দৃষ্টে বিজ্ঞমহলের জিজ্ঞাসা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের খুঁটির জোর কোথায়? সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষের অন্তরালে অন্য কেউ আছে কী?
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ এর বেঁধে দেওয়া ৭ দিনের সময় শেষ হওয়ার পর ও রেলিগেট – নগরঘাট খেয়াঘাটের রেলিগেট পাড়ে ফেরির ইজারাদার ফিরোজ মোল্লার অবৈধ চাঁদাবাজি ও ফেরিতে রশিদ ছাড়া অতিরিক্ত টোল উত্তোলন চলছে ।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে সড়কের নির্বাহী প্রকৌশলী চাঁদাবাজি বন্ধ করে ফেরির টোল ফেরিতে উত্তোলনের নির্দেশ দেন । এবং খেয়াঘাটের রেলিগেট পাড়ের জায়গা সড়ক বিভাগের নয় বলে জানিয়েদেন ইজারাদারের ম্যানেজার মিঠুন সাহাকে । কিন্ত অবৈধ চাঁদাবাজি ও ফেরিতে অতিরিক্ত টোল উত্তোলন চালিয়ে যেতে কোন নির্দেশনাই মানতে রাজি নন ফেরির ইজারাদার ফিরোজ মোল্লা। ইজারা প্রদান কারি সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে যেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন । জানা যায়, জেলা পরিষদের মালিকানাধীন রেলিগেট – নগরঘাট খেয়াঘাটের রেলিগেট পাড়ে ফেরির ইজারাদার ফিরোজ মোল্লার অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধে ও গত রবিবার ১৩ ই আগস্ট জেলা আইন-শৃঙ্খলার মাসিক সভায় ফেরির অনিয়ম ও অতিরিক্ত টোল উত্তোলনের বিষয়টি উত্থাপিত হওয়ায় এবং সড়ক বিভাগের গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে ফেরিঘাটের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ সরেজমিনে গিয়ে ইজারাদারকে সকল অনিয়ম বন্ধের জন্য ৭ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছেন। এ নিয়ে দ্বিতীয় বার সরেজমিন পরিদর্শন করে ফেরির ইজারাদারকে সর্তক্য করলেন ।
সড়ক বিভাগ, খুলনার অধীন দিঘলিয়া -(রেলিগেট) – আড়ুয়া- গাজীরহাট – তেরখাদা সড়কের নগরঘাটা ফেরিঘাটে পারাপারকারী যানবাহন হতে রশিদ ছাড়া জোর পূর্বক ভাবে অতিরিক্ত টোল আদায় কোনভাবে বন্ধ হচ্ছে না । অতিরিক্ত টোল বন্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নির্দেশনাকে মানছেন না ইজারাদার। অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পরও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় কতৃপক্ষের উদাসীন তাকেই দায়ী করেছেন ভুক্তভোগীরা।জানা যায়, জেলা আইন-শৃঙ্খলার মাসিক সভায় নগরঘাটা ফেরিঘাটের অনিয়ম ও অতিরিক্ত টোল উত্তোলনের বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে বলে জানান দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ। এরপর নড়েচড়ে বসেন সড়ক ও জনপদের কর্তা ব্যক্তিরা । সরেজমিনে গিয়ে ইজারাদারকে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধের জন্য সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধিদপ্তরাধীন নগরঘাটা ফেরীর টোল আদায়ের জন্য মেসার্স ফারদিন ষ্টোন বাজার নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা প্রদান করা হয় যার প্রোঃ মোঃ ফিরোজ মোল্লা। ইজারা প্রাপ্তির পর থেকে নগরঘাট খেয়াঘাটের রেলিগেট পাড়ে অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন, ফেরিতে রশিদ ছাড়া জোর পূর্বক ভাবে অতিরিক্ত টোল আদায় করছে।পারাপারকৃত যানবাহন থেকে জোর পূর্বক অতিরিক্ত টোল আদায় করছে, টোলের রশিদ চাইলে হুমকি- ধামকি প্রদান করেন।
অতিরিক্ত কয়েক গুণ বেশি টাকা উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু অতিরিক্ত ফেরীর টোল উত্তোলন নয় তার নিয়োজিত সিদ্দিক মুন্সী, দেলোয়ার ও গনি মিয়া অবৈধভাবে নগরঘাটের রেলিগেট পাড়ে ফেরী ও নৌকায় পারাপারকৃত মালামালের গাড়ি থেকে জোর করে পুনরায় টোল উত্তোলন করছে ফেরীর ইজারাদার ফিরোজ মোল্লার নির্দেশে। ফেরীতে পারাপারকৃত মালামালের গাড়ি ও যানবাহন থেকে অতিরিক্ত টোল উত্তোলন বন্ধ ও ইজারা বাতিলসহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেছেন ভুক্তভোগীমহল। এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন , জেলা পরিষদের মালিকানাধীন নগরঘাট খেয়াঘাটের রেলিগেট পাড়ে ফেরির ইজারাদার টোল উত্তোলন করছে এমন অভিযোগ পেয়ে ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রসেনজিৎ পালকে প্রধান করে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল তার প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি সেখানে নগরঘাটা ফেরিঘাটের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়টি উঠে এসেছে। এ কারণে আমি গতকাল বৃহস্পতিবার ও গত রবিবার সরেজমিনে গিয়ে
ইজারাদারকে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছিলাম এবং ফেরির টোল সঠিক ভাবে ফেরিতে উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছিলাম। ইজারাদার মৌখিক নির্দেশনা না মেনে পূর্বের অনিয়ম বহাল রেখেছেন। এ কারণে পুনরায় ৭দিন পর্যবেক্ষণের জন্য একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে । তদন্ত টিম আগামী ২৭ তারিখ থেকে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করবেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়াও স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদীর কঠোর নির্দেশনা রয়েছে অতিরিক্ত টোল সহ সকল অনিয়ম বন্ধের। ভুক্তভোগীদের জিজ্ঞাসা নগর ঘাটা ফেরিঘাটের ইজারাদার মোঃ ফিরোজ মোল্লার দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রমাণ থাকার পরও তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা কেন ?