সেলিম মাহবুব ছাতকঃ ছাতকের অন্যতম ও সর্বোচ্চ বিদ্যাপীট গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিকের বিরুদ্ধে কলেজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অনিয়ম-দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও কলেজের অর্থ আত্মসাতের বিষয় নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রায় এক বছর ধরে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা চলে আসছিল। এ নিয়ে বিগত দিনে কলেজ অধ্যক্ষের অপসারণ দাবী করে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী, শিক্ষানুরাগী সহ এলাকার লোকজন সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছেন। প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে
অধ্যক্ষের অপসারণ চেয়ে স্মারকলিপিও দেয়া হয়েছে। গত ৮ আগষ্ট অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিকসহ কলেজের অধ্যাপক রামেন্দু বিকাশ দে, ও উপজেলা গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের সুহিতপুর গ্রামের মৃত মোবারক আলীর পুত্র তৈমুছ আলীর বিরুদ্ধে আইনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সাবেক উপজেলা চেয়াম্যান ওলিউর রহমান চৌধুরী বকুল। অভিযোগ থেকে জানা যায়, এলাকার সর্বমহলের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় স্বাধীনতার পরবর্তি সময়ে গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি ডিগ্রি কলেজ তিলে-তিলে গড়ে উঠে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি আতাউল গনি ওসমানী। বর্তমানে কলেজে ডিগ্রি ও অনার্স কোর্স চালু রয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, সুজাত আলী রফিক আদালতের নির্দেশ
উপেক্ষা করে বে-আইনীভাবে অধ্যক্ষের পদ দখল করে আছেন। তিনি কলেজের সর্বোচ্চ পদ দখল করে সহযোগিদের নিয়ে বিভিন্ন কৌশলে কলেজের অর্থ আত্মসাথে লিপ্ত রয়েছেন। গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি কলেজের নামে পুবালী ব্যাক গোবিন্দগঞ্জ শাখায় একটি একাউন্ট রয়েছে। কলেজের গভর্নিংবডির সভাপতি ও সদস্য সচিবের যৌথ স্বাক্ষরে ওই ব্যাংক একাউন্টে লেনদেন করার কথা। কিন্তু তা না করে গোবিন্দগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা চত্বর সংলগ্ন আনোয়ারা কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত পরিচয় বিহীন একটি ইউনিয়ন ব্যাংকের উপশাখায় অতি গোপনে একটি একাউন্ট নং-০৮৭১২১০০০০৯৮৮ সৃষ্টি করে কলেজ তহবিলের প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। ইউনিয়ন ব্যাংকে সরকারের একাউন্ট রুলস, নিয়ম-নীতি ও নির্দেশিকা অম্যান্য করে বে-আইনীভাবে সরকারের বেতনভুক্ত কলেজের
রামেন্দু বিকাশ দে ও তৈমুছ আলী অতি গোপনে কলেজের অর্থ আত্মসাত করার জন্য এ একাউন্ট সৃজন করেন। পরে এসব অর্থ অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক সহ একে-অপরের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি সর্ব মহলে ব্যাপক জানাজানি হলে এলাকার লোকজন প্রতিবাদী হয়ে উঠেন। কলেজ তহবিলের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি প্রতিকার চেয়ে গভর্নিংবডির সভাপতিকে অবহিত করেন এলাকার শিক্ষানুরাগী লোকজন। অভিযোগে বর্নিত আত্মসাত বিষয়ে তপশীল ভুক্ত দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের সরজমিন
তদন্ত ও আদালতের মাধ্যমে বর্নিত ব্যাংক হিসাব নং এর হিসাব সংগ্রহ ও আত্মসাতকৃত অর্থের পরিমান নির্ণয় পূর্বক আত্মসাতকৃত টাকা উদ্ধারসহ পেশাধারী তদন্ত বিভাগে তদন্তের জন্য ন্যস্ত করার দাবী জানানো হয়। এ ব্যাপারে অভিযোগকারী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল জানান, কলেজের নামে নিয়মিত ব্যাংক একাউন্ট থাকা সত্বেও অতি গোপনে নতুন একাউন্ট সৃজন করে কলেজের বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি গভর্নিংবডির সভাপতিকে অবহিত করা হয়। বিষয়টি জেনে তিনি ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এ ব্যাপারে ছাতক থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ শাহ আলম অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন।