বাগেরহাট প্রতিনিধি :::: শহরের কোলাহল থেকে একটু শান্তির পরশ আর বিনোদন পেতে (২৪ জুলাই) সোমবার বিকালে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের শামসুল উলুম খাদেমুল ইসলাম ঘোলা মাদ্রাসা ও এতিমখানা সংলগ্ন চরপাড়া ডাঙ্গায় আসতে শুরু করেন বিনোদনপ্রেমীরা। কেউবা হেঁটে, কেউবা সাইকেলে বা মোটরসাইকেলে। উদ্দেশ্য বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ঘুড়ি ওড়ানো
প্রতিযোগিতা দেখা। আর অপরকে বিনোদন দিতে বিভিন্ন ধরনের ঘুড়ি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন নানা বয়সি মানুষ। বউ, চিলা,পতেঙ্গা,ঢেপস, ঈগল,কাঠাম,জের,প্লেন,দরজা,চাঁনগুদাম প্রায় ১০ ধরনের রংবেরংয়ের ঘুড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন প্রতিযোগীরা। হাওয়ায় ভেসে থাকা ঘুড়ি সবার ওপড়ে ওঠানোর লড়াই চলে সন্ধা পর্যন্ত। ১ ক্যাটেগড়িতে হয় প্রতিযোগিতা। বিকালের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে উপজেলার
শামসুল উলুম খাদেমুল ইসলাম ঘোলা মাদ্রাসা ও এতিমখানা সংলগ্ন চরপাড়া ডাঙ্গায় এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে স্থানীয় যুবসমাজ। বিকালভর চলা এই প্রতিযোগিতায় চিতলমারী বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা অর্ধশতাধিক ব্যক্তি তাদের ঘুড়ি নিয়ে অংশ নেন। সন্ধ্যায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। মনোমুগ্ধকর ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ও দেখতে মাঠে ভিড় করে নানা বয়সি মানুষ। প্রতিবছর
এ ধরনের আয়োজন করার দাবি জানান তারা। প্রতিযোগিতায় প্রথম হন হিজলার আয়ুব আলী মোল্লা, দ্বিতীয় হন কলাতলার রাহুল মোল্লা ও তৃতীয় হন নালিয়ার আতিয়ার শেখ। ঘুড়ি ওরানো দেখতে যাওয়া ব্যবসায়ী ইসকেনদার শেখ জানান, ঘুড়ি ওড়ানোর খবর পেয়ে দেখতে এসেছেন। ছোটবেলায় গ্রামে এ প্রতিযোগিতা দেখেছেন। অনেক দিন পর এ প্রতিযোগিতা দেখে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিবপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আতিয়ার রহমান জানান, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিযোগিতা দেখে খুবই আনন্দিত তিনি। প্রতিবছর এ ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা উচিত, যেন বর্তমান প্রজন্মের বাংলার ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা পায়।নিজে আনন্দ পাওয়া আর অন্যকে আনন্দ দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বলে জানালেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিবপুর গ্রামের দাউত আলী শিকদার জানান, ছোটবেলা থেকেই গ্রামের মাঠে ঘুড়ি উড়িয়েছেন। যেখানেই এ প্রতিযোগিতায় হয় সেখানেই যান। তবে পুরস্কার জেতা মূল উদ্দেশ্য নয়। তিনি আনন্দ পান ঘুড়ি উড়িয়ে অন্যদের আনন্দ দিতে। আয়োজকদের একজন আবদুল্লা শেখ জানান, হারানো ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আর তা বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতেই এ আয়োজন।