আলী আজীম, মোংলা (বাগেরহাট): মোংলা বন্দরে “আয়োজনে মোংলা বন্দরে (ICITAP) এর কাউন্টার ওইল্ডলাইফ ট্রাফিকিং টিম বন্যপ্রানী পাচার প্রতিরোধের উপর প্রশিক্ষণ” করা হয়। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেটিভ ট্রেনিং অ্যাসিসট্যান্স প্রোগ্রাম (ICITAP) এর কাউন্টার ওইল্ডলাইফ ট্রাফিকিং টিম বন্যপ্রানী পাচার প্রতিরোধের উপর এক প্রশিক্ষণ আয়োজন করে। গত সোমবার (২৯ মে) শুরু হওয়া এ
প্রশিক্ষণে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ৬০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। ICITAP মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের অংশ এবং ২০০৩ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকারের আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থাকে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করে আসছে। মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুর ১২টায় দুইদিন ব্যাপী এ প্রশিক্ষণের আজ সমাপনী অনুষ্ঠানে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী প্রধান
অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহনকারী প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদ বিতরণ করেন। এ প্রশিক্ষণের সার্বিক সমন্বয় করেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মেহেদী, (জি), বিএন। ICITAP এর নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বন্যপ্রাণী বিষয়ক সিনিয়র আইন প্রয়োগকারী উপদেষ্টা ক্রেইগ ফুলস্টোন এবং তার দলের অন্য দুই সদস্য ড. নাসির উদ্দিন এবং ড. সামিয়া সাইফ
অংশগ্রহণকারীদের বন্যপ্রাণী অপরাধ মোকাবেলার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। এসময় অন্যান্য মারাত্নক অপরাধ যেমন অস্ত্র, মাদক, এবং মানব পাচারের সাথে বন্যপ্রাণী পাচারের যোগসূত্রের বৈশ্বিক ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট আলোচনা করেন। ফুলস্টোন বলেন, বিশ্বের বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্যের প্রায় ৯০ ভাগ সমুদ্রবন্দর দিয়ে শিপিং কন্টেইনারের মাধ্যমে হয়ে থাকে। আর এই অবৈধ বাণিজ্য বছরে ২৩-২০০ বিলিয়ন মার্কিন
ডলারের সম পরিমাণ বলে অনুমান করা হয়। USAID এর অর্থায়নে ICITAP-এর বন্যপ্রাণী সুরক্ষা কার্যকলাপের অংশ হিসেবে কাউন্টার ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাফিকিং টিম বন্যপ্রাণী অপরাধ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং আন্তঃ-বাহিনি সহযোগিতাকে উৎসাহিত করার জন্য সারা দেশে কাজ করছে। ড. নাসির উদ্দিন বন্যপ্রাণীর সন্দেহভাজন চালান বহনকারী জাহাজগুলা সনাক্তের উপায় এবং অবৈধ বন্যপ্রাণী পণ্যের
চোরাচালান আড়াল করার জন্য প্রায়শই ব্যবহৃত দ্রব্যের ধরন সম্পর্কে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের ধারণা দেন। ফুলস্টোন মনে করেন বৈশ্বিক চাহিদা এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের সাথে সাথে মোংলা সমুদ্র বন্দরের ব্যবহার ও গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । বাংলাদেশের
পাশাপাশি পার্শ্ববর্তি দেশ ভারত, নেপাল এবং ভুটান এই বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছে। কাজেই দিন দিন মোংলা বন্দরের পরিধি ও কলেবর বৃদ্ধি পাবে। ভবিষ্যতে বন্যপ্রাণী অপরাধের মত একটি বৈশ্বিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এই ধরনের প্রশিক্ষণ মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করবে। এ প্রশিক্ষণে শুধুমাত্র বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বন্দর ব্যবহারকারীগণ অংশগ্রহণ করেছেন।