খেয়াঘাটের মালিকানা নিয়ে দুই দপ্তরের রশি টানাটানিতে, ভুক্তভুগী সাধারণ জনগন ও ইজারাদার

রানা মোল্লা দিঘলিয়া প্রতিনিধিঃ- খুলনা শহর সংলগ্ন কয়েকটি খেয়াঘাটের মালিকানা নিয়ে জেলা পরিষদ ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) দ্বন্দ্বে অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত দুইদিন ধরে এই দ্বন্দ্বের ভুক্তভুগী দিঘলিয়া উপজেলার হাজার হাজার সাধারণ জনগন ও ইজারাদার। দুই দপ্তর হতে একই খেয়া ঘাটের ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার পর এই দ্বন্দ প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে রুপ নিয়েছে, বিপাকে পড়েছে সাধারণ জনগন ও ইজারাদার। খুলনা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কাষ্টমঘাট,

জেলখানাঘাট, দৌলতপুর বাজার খেয়াঘাট, বার্মাশিল ঘাট, নগরঘাট/রেলিগেটঘাট ও স্টিমারঘাট খেয়াঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পার হয়। এই ৭টি ঘাটের বন্দোবস্ত (ইজারা) দিতে দু’পক্ষই পাল্টাপাল্টি দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেয়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি জেলা পরিষদ এসব খেয়াঘাটের ইজারা দিতে দরপত্র ঘোষণা করে এবং গত ৫ মার্চ সিটি করপোরেশন ওই ঘাটের ইজারা দিতে পাল্টা দরপত্র দেয় এবং সর্বচ্চ দরদাতা কে উভয় দপ্তর ইজারা প্রদান করে কার্যাদেশ দেয়। গত ১ লা বৈশাখ উভয়

ইজারাদার একই ঘাটে টোল আদায় শুরু করলে ঘাট এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যা এখনও বিদ্যমান। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান না হলে, যে কোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এদিকে দুই দপ্তরের এই দ্বন্দ্বের সুযোগে গতকাল নগরঘাট/রেলিগেট খেয়া ঘাটে অবস্থিত ফেরি ঘাটের ইজারাদার ফিরোজ মোল্লা জোর করে খেয়া পারাপারের যাত্রীদের কাছ থেকে টোল আদায় করছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। এবিষয়ে সিটি কর্পোরেশন থেকে ইজারা প্রাপ্ত দৌলতপুর খেয়া ঘাটের ঠিকাদার

হায়দার আলী মোড়ল বলেন, সিটি কর্পোরেশন কতৃপক্ষ ১লা বৈশাখ আমাকে ঘাট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল, সে মোতাবেক আমি ঘাটে আসলেও তারা আমাকে ঘাট বুঝিয়ে না দিয়ে পরবর্তীতে বুঝিয়ে দিবেন বলে জানান। আমি ঘাট বুঝে না পাওয়ায় আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আশা করছি কতৃপক্ষ দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করে আমাকে ঘাট বুঝিয়ে দেবে। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘হস্তান্তরিত ফেরিঘাট/খেয়াঘাট ইজারা ও ব্যাবস্হাপনা নীতিমালা-২০০৩’ অনুযায়ী

উল্লেখিত খেয়াঘাট গুলোর ইজারা দেওয়ার আইনসিদ্ধ কতৃপক্ষ খুলনা সিটি করপোরেশন, যা নিয়ম বহির্ভূত ভাবে জেলা পরিষদ ইজারা প্রদান করে আসিতেছে। এসব ঘাট পরিচালনার জন্য জেলা পরিষদের কোন আইনানুগ ডকুমেন্টস না থাকা সত্বেও দীর্ঘদিন ধরে এসব ঘাট হতে ইজারা বাবদ টাকা নিয়ে একক ভাবে ব্যায় করে আচ্ছে, যা স্থানীয় সরকার বিভাগ কতৃক প্রনিত আইন পরিপন্থী। উলেখ্য স্থানীয় সরকার বিভাগ কতৃক প্রনিত হস্তান্তরিত ফেরিঘাট/খেয়াঘাট ইজারা ও ব্যাবস্হাপনা

নীতিমালা-২০০৩ এ স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ আছে যে, ফেরিঘাট/খেয়াঘাট একই ইউনিয়ন এর মধ্যে অবস্থিত হলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের ব্যাবস্হাপনায় পরিচালিত হইবে। খেয়াঘাটের উভয় পাড় একই উপজেলার আলাদা দুটি ইউনিয়ন হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইজারা প্রদান করিবে। আন্তঃ উপজেলা খেয়াঘাট সমূহ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ইজারা প্রদান করিবে। আন্তঃ জেলা খেয়াঘাট সমূহ বিভাগীয় কমিশনার ইজারা প্রদান করিবে। খেয়াঘাটের একটি পাড় ইউনিয়ন সীমার মধ্যে এবং অপর পাড়টি পৌরসভা/সিটি করপোরেশনের এলাকায় অবস্থিত হইলে সেই খেয়াঘাট সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন ইজারা প্রদান করিবে। নীতিমালায় ইজারা হতে প্রাপ্ত অর্থ বন্টনের বিষয়ে সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top