তাপ প্রবাহ আরও তীব্রতর হওয়ার আশঙ্কা

 ইঞ্জিনিয়ার ওয়াহিদ মুরাদ চীফ রিপোর্টার– এপ্রিল এর শুরু থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বয়ে যাচ্ছে খরা ও তাপ প্রবাহ। তাপপ্রবাহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রায় চলমান রয়েছে। তবে তা আরও তীব্রতর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দেশের পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও মৃদু থেকে মাঝারি তাপ প্রবাহ শক্তিশালী হয়ে মাঝারি থেকে তীব্র তাপ প্রবাহে রূপ নিতে পারে। তাপ প্রবাহের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করার পরামর্শ প্রদান করেছেন আবহাওয়া

বিদগণ। সূর্যের আলো এড়িয়ে চলা: সকাল ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত রোদের তীব্রতা বেশি থাকে। এ সময় জরুরি কাজ না থাকলে বাইরে বের না হওয়াটাই ভালো। ছাতা ব্যবহার: বাইরে বের হলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করা, যাতে সরাসরি রোদের মধ্যে থাকতে না হয়। এ সময় চওড়া কিনারাযুক্ত টুপি, ক্যাপও ব্যবহার করা যেতে পারে। যারা মাঠেঘাটে কাজ করেন, তারা মাথায় ‘মাথাল’ জাতীয় টুপি ব্যবহার করতে পারবেন, যা তাদের রোদ থেকে রক্ষা করবে। বেশি করে পানি পান করা: গরমে ঘাম

হয়ে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়, তখন ইলেট্রোলাইট ইমব্যালান্স তৈরি হতে পারে। এ কারণে এই সময়টাতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। লবণ মিশিয়ে পানি পান করতে পারলে আরো ভালো। ফলের জুস খাওয়া শরীরের জন্য ভালো, তবে এ জাতীয় জুস খাওয়ার সময় দেখে নিতে হবে সেটি পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত পানি দিয়ে তৈরি কিনা। খোলা, পথের পাশের দুষিত পানি বা সরবত এড়িয়ে চলতে হবে। সূতির কাপড় পরতে হবে: গরমের এই সময়টায় জিন্স বা মোটা কাপড় না পরে

সুতির নরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। এ ধরণের কাপড়ে অতিরিক্ত ঘাম হবে না এবং শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করবে। গরমের সময় কালো বা গাঢ় রঙের কাপড় এগিয়ে সাদা বা হালকা রঙের কাপর পরিধান করা ভালো, কারণ হালকা কাপড় তাপ শোষণ করে কম। সঠিক জুতা নির্বাচন: গরমের সময় খোলামেলা জুতা পরা উচিত, যাতে পায়ে বাতাস চলাচল করতে পারে। কাপড় বা সিনথেটিকে বাদ দিয়ে চামড়ার জুতা হলে ভালো, কারণ এতে গরম কম লাগে। সম্ভব হলে মোজা এড়িয়ে চলা যেতে

পারে। ভারী ও ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন: এ জাতীয় খাবার হজম করতে সময় বেশি লাগে। ফলে সেটি শরীরের ওপর বাড়তি চাপ ফেলে এবং শরীরের উষ্ণতা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য সেটি আরো বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। খাবারের মেন্যু থেকে গরমের সময় তেলযুক্ত খাবার, মাংস, বিরিয়ানি, ফাস্টফুড ইত্যাদি বাদ দেয়া যেতে পারে। বরং শাকসবজি ও ফলমূল বেশি করে খাওয়া যেতে পারে। পুরনো বা বাসী খাবার না খাওয়া: গরমে খাবার-দাবার তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে

বাসী খাবার বা আগের দিন রান্না করা খাবার খাওয়ার আগে দেখে নিতে হবে যে, সেটি নষ্ট কিনা। এ জাতীয় খাবার খেলে ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানাসহ পেটের অসুখ হতে পারে। ঘরে পানি ভর্তি বালতি রাখা: এসি না থাকলেও সমস্যা নেই। ঘরের ভেতর ফ্যানের নীচে একটি পানি ভর্তি বালতি রাখুন, যা ঘরকে খানিকটা ঠাণ্ডা করে তুলবে। প্রতিদিন অবশ্যই গোসল করা: গরমের সময় প্রতিদিন অবশ্যই গোসল করতে হবে, যা শরীর ঠাণ্ডা রাখবে। দিনে একাধিকবার হাত, মুখ, পায়ে পানি দিয়ে ধুতে পারলে

ভালো। বাইরে বের হলে একটি রুমাল ভিজিয়ে সঙ্গে রাখতে হবে, যা দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর মুখ মুছে নেয়া যাবে। হিট স্ট্রোকের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা: প্রচণ্ড গরমে শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে। ফলে মাংসপেশি ব্যথা, দুর্বল লাগা ও প্রচণ্ড পিপাসা হওয়া, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম করা, বমিভাব ইত্যাদি লক্ষণ দেখা গেলে প্রেশার পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top