রিপোর্টারঃ মনজুরুল ইসলাম ::: নাটোরের বড়াইগ্রামের আটঘরিয়া গ্রামের ফসলি মাঠে আগুন লেগে প্রায় ৩৬ বিঘা জমির পাকা গম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ২৪ জন কৃষক। তবে স্থানীয় কৃষি বিভাগের দাবি ১৭ কৃষকের ১২ বিঘা জমির পাকা গম পুড়ে গেছে। শুক্রবার দুপুরে একজন কৃষকের অসর্তকতায় এই ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক জানায়, শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটলেও প্রায় এক ঘন্টা পর ৩ টার দিকে তারা বিষয়টি
জানতে পারেন। ততক্ষনে আগুনে গম পুড়ে ছাই হয়ে যায়। খবর পেয়ে এলাকাবাসী ও বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান আলী আকবর জানান, রওশন হোসেন নামের এক কৃষক শুক্রবার সকালে তার জমির পাকা গম কেটে ঘরে তোলেন। দুপুর ১২টার দিকে গমের খরের গোড়ার অংশগুলো ধ্বংস করার জন্য তিনি তার ওই জমিতে আগুন দিয়ে বাড়ি চলে আসেন। খরের গোড়ায় লাগানো সে আগুন পাশের পাকা গম গাছে
লাগার পর তা দ্রুত অন্যান্য কৃষকের জমিতে ছড়িয়ে পড়ে। জুম্মা নামাজ এবং রমজান মাসের প্রথম রোজার দিন হওয়ায় ওই ফসলের মাঠ এলাকায় কোন কৃষক ছিলো না। ফলে নিমিষেই আগুনে সব পাকা গম পুড়ে যায়। বেলা তিনটার দিকে খবর পেয়ে বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আশরাফ, সাইফুল, শামসুল, গিয়াস ও শাহজাহান জানান, পুড়ে যাওয়া ওই সব জমির এক বিঘায় কমপক্ষে ১৫ মণ গম উৎপাদন হয়। সে হিসেবে ৩৬
বিঘা জমিতে আনুমানিক ৫৪০ মণ গম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ্র আনুমানিক মূল্য প্রায় ১১ লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক চাঁদ মিয়া, সাত্তার, মজিদ, কাদের ও গাফফার বিলাপ করে বলেন, সামনে ঈদ। গম বিক্রি করে ছেলে-মেয়েদের জন্য ঈদের জামা-কাপড় কিনতে পারতাম। কিন্তু সেটা আর হলো না। এছাড়া তারা সহ কৃষকদের অনেকেই সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে গম বুনেছিলেন। সে টাকাও পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। এমন ক্ষতিতে তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার
শারমিন সুলতানা বলেন, রওশন হোসেন নামে এলাকার একজন সাবেক সেনা সদস্যর অসাবধনতার কারনে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে এলাবাসী সহ ক্ষতিগ্রস্থরা জানিয়েছেন। ঘটনাটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে সরকারীভাবে ব্যবস্থা করা যেতো। তবুও ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ১৭ কৃষক। কারো ১০ কাঠা,কারো ৭ কাঠা এভাবে ১২ বিঘা জমির পাকা গম পুড়ে গেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সহ এলাকার বিশিষ্টজনরা ক্ষতিগ্রস্থ কৃষখদের নিয়ে
রওশনের সাথে বসে স্থানীয়ভাবে সুরাহার উদ্যোগ নিয়েছেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জানান, ক্ষতিগ্রস্থদের নামের তালিকা করে প্রত্যেককে দ্রুত প্রণোদনা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: মারিয়াম খাতুন ঘটনার সত্যতা নিশিচত বলেন, তিনি কৃষি কর্মকর্তার সাথে কথা বলে সম্ভব হয় এমন কিছু একটা ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো যেন ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হন সেজন্য তাদের তালিকা করে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে।