নড়াইলে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ পদ্ধতির স্বচ্ছতায় নিজ মেধা ও যোগ্যতায়-২৭তরুণ-তরুণীর স্বপ্ন পূরণ

খন্দকার সাইফুল নড়াইলঃ ‘চাকরি নয়, সেবা’- প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পু্লিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে প্রশিক্ষণের জন্য চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। আজ ২২ মার্চ ২০২৩ (বুধবার) সকালে নড়াইল পুলিশ লাইনসে্ এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনাব মোসাঃ সাদিরা খাতুন, সুযোগ্য পুলিশ সুপার, নড়াইল। পুলিশ সুপার মহোদয় এ সময় উত্তীর্ণ ২৭ জন কনেস্টবলকে ক্রেস্ট ও ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করেন। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়ন ও স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী করে স্মার্ট পুলিশিং ব্যবস্থা বিনির্মাণের প্রত্যয়ে সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে যোগ্যতম প্রার্থীকেই নির্বাচিত করা হয়েছে। যে সকল প্রার্থী প্রতিটি পরীক্ষায় নিজ নিজ

যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই নিয়োগযোগ্য হিসেবে মনোনীত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যকর নির্দেশনায় ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পুরোপুরি অনিয়ম ও দুর্নীতির দুয়ার বন্ধ করে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নিয়োগ উপহার দিতে শুরু থেকেই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ(আইজিপি) জনাব চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম(বার), পিপিএম মহোদয়। চাকরি পেয়ে আনন্দ অশ্রু বিজড়িত কণ্ঠে লোহাগড়া উপজেলার এতিম নাইম শেখ বলেন, ছোট বেলায় বাবা মারা যায়, মা আমাকে রেখে চলে যায়। অনেক কষ্টে মানুষ হয়েছি। আমার চাচা, ফুফু, দাদী আমাকে লেখাপড়া শিখিয়েছে, মানুষ করেছে।

প্রথম কয়েকটি মাঠে চাকরি হয় নি নাইমের। এটিই তার শেষ মাঠ ছিল। অনেকেই চাকরির মাঠে আসতে নিষেধ করেছিল এবং বলেছিল এতিমের কোন দিন চাকরি হয় নাকি। হতাশ নাইম চাকরির প্রত্যাশায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করে। কিন্তু বিশ্ব ইজতেমার যানজটের কথা ভেবে সেদিন সে স্বজনদের পরামর্শে বাড়ি ফিরে আসে। পরের দিনই ফোনে এসএমএস আসে তার। প্রথম দিন মাঠে এসে জুতা হারিয়ে ফেলে সে। পরে পুলিশ সুপার মহোদয়ের আর্থিক সহযোগিতায় চাকরির বই কিনে পড়ালেখা করে সে। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে অবশেষে পূরণ হলো পিতা মাতাহারা এতিম নাইমের স্বপ্ন, যোগ দিলেন বাংলাদেশ পুলিশে।

নড়াগাতি থানার স্বামীহারা এক মায়ের সন্তান ছাব্বির হোসাইন রনি। বাংলাদেশ পুলিশে তার চাকরি হয়েছে। দুঃখিনী মা অশ্রু বিগলিত কণ্ঠে বলেন, মানুষ বলে টাকা ছাড়া চাকরি হয় না। আমি আমার ছেলেকে দিয়ে যা পেয়েছি, এর থেকে কিছু বলার ভাষা আমি খুজে পাচ্ছি না। এখনো মানুষ বিশ্বাস করে না যে, আমার ছেলের টাকা ছাড়া চাকরি হয়েছে কিন্তু আমার তো টাকা দেওয়ার কোন যোগ্যতা ছিল না। এভাবে অভিভাবকগণ ও প্রার্থীরা অবলীলায় তাদের মনের কথাগুলো ব্যক্ত করেছেন। কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন ও তদবির ছাড়াই কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়ায় সকলে খুবই আনন্দিত এবং পুলিশ সুপার মহোদয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ।অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণও বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top