রিপোর্টারঃ আহসান হাবীব ::: ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে মিথ্যা গুজব রটিয়ে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে হেযবুত তওহীদের দুই সদস্যকে নৃশংসভাবে হত্যা, বাড়িঘর লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞের সাথে জড়িতদের বিচারের দাবিতে এবং হেযবুত তওহীদের বিভিন্ন কৃষিভিত্তিক, শিল্পভিত্তিক ও শিক্ষামূলক উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে ১৪ই মার্চ মঙ্গলবার সকাল ১০.০০ ঘটিকায় নোয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে নোয়াখালী জেলা হেযবুত
তওহীদ। নোয়াখালী জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি গোলাম কবিরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন, হেযবুত তওহীদের সহকারী সাহিত্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রাকীব আল হাসান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন “গত ২৭ বছরে একটি ধর্মব্যবসায়ী উগ্রবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হেযবুত তওহীদের সদস্যদের উপর বিভিন্ন স্থানে বহুবার হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ পৈশাচিক হামলাটি হয় ২০১৬ সালের ১৪ই
মার্চ। সেদিন হেযবুত তওহীদের এমামের বাড়িতে নির্মাণাধীন মসজিদকে গির্জা বলে গুজব রটিয়ে ধর্মব্যবসায়ী একটা শ্রেণি ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে। দিনভর চলে হামলা, জ্বালাও পোড়াও, রক্তপাত ও হত্যাকান্ড। হেযবুত তওহীদের দু’জন সদস্যকে হত্যা করে পেট্রোল ঢেলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়।” তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘হত্যাকান্ডের ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও অপরাধীদের বিচার হয়নি। হামলার ঘটনায় জড়িত থাকা বহু আসামী স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর আশ্রয়ে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে
কিন্তু পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করছে না। আর সেই সুযোগ নিয়ে ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও কুচক্রী মহল পুনরায় হেযবুত তওহীদের এমামের বাড়িতে হামলার ষড়যন্ত্র করছে।’ অনুষ্ঠানে সোনাইমুড়ীতে উগ্রবাদীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়া ইব্রাহীম রুবেলের স্ত্রী হাজেরা আক্তার এর বক্তব্যে আবেগ ঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মানববন্ধনে হাজেরা আক্তার বলেন, মসজিদ নির্মাণের মত পবিত্র কাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে গিয়ে নির্মমভাবে খুন হয় আমার স্বামী। এই উগ্রবাদী ধর্মব্যবসায়ীরা প্রচার
করতে থাকে যে, হেযবুত তওহীদ খ্রিষ্টান, তারা গ্রামে একটি গির্জা নির্মাণ করছে। এসব গুজব ছড়িয়ে ঘটনার দিন বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসা থেকে ছাত্রদের নিয়ে এসে ‘খ্রিষ্টান মারো, গির্জা ভাঙো’ স্লোগান দিয়ে তারা একযোগে হামলা চালায়। তারা আমার স্বামীর হাত পায়ের রগ কাটে, দুই চোখ উপড়ে ফেলে, পরে জবাই করে আগুনে
পুড়িয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে। কি দোষ ছিল আমার স্বামীর? আমি কেন বিচার পাব না? কেন বিচারের দাবিতে আমাকে রাস্তায়-রাস্তায়, দ্বারে-দ্বারে ঘুরতে হবে? আর কতকাল ধর্মের মুখোশধারী, ধর্মব্যবসায়ী গুজব-সন্ত্রাসীদের এভাবে প্রশ্রয় দিয়ে যাওয়া হবে? আমি এর জবাব চাই, আমার স্বামীর খুনীদের বিচার চাই। মানববন্ধন শেষে খোকন ও রুবেলের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে এবং উগ্রতা, ধর্মব্যবসা, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।