সাপাহারে প্রতি শুক্রবারে ভিখারীদের পেটপুরে খাইয়ে প্রশংসায় ভাসছেন ছানা মেকার

মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহারে প্রতি শুক্রবার ভিখারী, অসহায় ও দুঃস্থদের একবেলা পেটপুরে খাওয়া দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন মোটরসাইকেল মেকানিক ছানাউল্লাহ্ (ছানা মেকার)। প্রতি সপ্তাহের শুক্রবারে পেটপুরে ভালো খাবার পেয়ে চরম সন্তুষ্ট ভিখারী সহ গরীব-অসহায় মানুষেরা। শুক্রবারে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জুময়া’র নামাজ শেষ হতেই উপজেলার থানা রোডে ছানা মেকারের দোকানে লাইন দিয়ে আসতে শুরু করে ভিখারীরা। একটু ভালো খাবারের আশায় মহিলারা একটু আগে এসেই বসে পড়েন লাইনে। উদ্দেশ্য সপ্তাহের এই দিনে পেটপুরে একটু ভালো খাবারের প্রত্যাশা। ছানা মেকার এই প্রতিবেদককে বলেন ,“আমি দীর্ঘদিন আগে মনে মনে পরিকল্পনা করি কিছু ভালো কাজ করার জন্য। যা মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে। যার ফলশ্রুতিতে বন্ধু

বান্ধবের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলে তারা আমাকে উপদেশ দেয় গরীব অসহায়দের খাওয়ানোর জন্য। আমি বিষয়টি মাথায় নেই। তারপর ভাবনা আসে কিভাবে গরীব অসহায়দের খাওয়ানো যায়! পরে খেবে দেখলাম প্রতি শুক্রবার ভিখারীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে শুক্রবারে ভিক্ষা করতে আসে। তাদেরকে অনেকে দুপুরে খেতে দেয়না। এই পরিকল্পনা থেকে আমি ১৮ সপ্তাহ আগে প্রথম শুরু করি ভিখারীদের খাওয়ানো। প্রথম অবস্থায় অনেকে না জানতে পারায় লোকজন কম হতো। বর্তমানে সবাই জেনে গেছে আমার দোকানে শুক্রবারে খাওয়া দেওয়া হয় সেই সুবাদে বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৭০/৮০ জন ভিখারী সহ গরীব অসহায় আসেন খাওয়ার জন্য।” তাদেরকে কেমন মানের খাওয়া দেওয়া হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন “ আমার সাধ্যানুযায়ী যথেষ্ঠ চেষ্টা করি মান সম্মত খাওয়া

দেবার জন্য। কোন সপ্তাহে মাছ-মাংস দিয়ে সাদা ভাত খাওয়াই আবার কোন সপ্তাহে পোলাও-বিরিয়ানি দিয়ে থাকি।” তিনি আরো বলেন “এতোগুলো মানুষের রান্না করা, পরিবেশন করা আমার একার জন্য দুঃসাধ্য ব্যাপার। সেক্ষেত্রে আমি আমার পাশ্ববর্তী দোকানদারদের কাছে কৃতজ্ঞ। কারন তারা প্রতি সপ্তাহে স্বেচ্ছায় আমাকে রান্না ও পরিবেশনে সহায়তা করেন।” খেতে আসা একজন মুরুব্বীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন “ বা হামরা গরীব মানুষ। বাড়িত ভালো মন্দ সেরকম কিচু খাতে পাই না। হামরা অপেক্ষা করি শুক্করবারের জন্যে। শুক্করবারে ছানা ভাই ভালো খাবার খাইতে দেয়। হামরা পেটভরে খায়ে আল্লার গোড়ত দোয়া করি যানে ছানা ভাই আরো ভালো কিছু করতে পায়”। স্থানীয় একাধিক লোকজন জানান, ছানা মেকার যে মহৎ কাজটি করছেন সেটি আসলে প্রশংসার যোগ্য। তার এমন ভালো কাজ দেখে বিত্তবানদেরও এমন ধরণের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান স্থানীয়রা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top