রাজশাহীতে স্বজনপ্রীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, তোপের মুখে প্রধান শিক্ষক

সুমন, রাজশাহী::::  ছেলে বউকে চাকরি দিয়ে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন রাজশাহী নগরীর গুলজারবাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন। স্কুলের কম্পিউটার অপারেটর পদের নিজ ছেলে তামিম হোসেনের বউকে গত কয়েকদিন আগে চাকরি দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। এর আগে তিনি ভাতিজার জামাই, নিজ শ্যালিকা, ভাতিজাসহ কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনকে চাকরি দেন। সর্বশেষ চারটি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আপন ছেলে বউকে চাকরি দেন প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন। বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর নগরীর গুড়িপাড়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা

দেয়। এ নিয়ে সকাল সাড়ে দশটার দিকে এলাকাবাসী ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে ঘিরে ধরেন। এ সময় এলাকাবাসী আমজাদ হোসেনের ছেলেবউ কুসুম খাতুন মৌসুমিকে নিয়োগ দেয়া হলেও অন্য তিনটি পদে স্থানীয়দের কেন চাকরি দেয়া হয়নি এবং এলাকাবাসীর কাউকে কেন চাকরি দেয়া হয়নি এসব নিয়ে প্রতিবাদ জানান। এক এক পর্যায়ে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে স্থানীয় এমপি ফজলে হোসেন বাদশা আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে আসা পর্যন্ত স্কুলে আসতে নিষেধ করা হয়। স্থানীয় সাইফুল জানান, প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন প্রায় ২৫

বছর ধরে চাকরি করছেন স্কুলে। এর পর তিনি বিভিন্ন সময়ে তার আত্মীয়-স্বজনসহ বাইরের লোকজনকে চাকরি দিয়েছেন আমরা কিছু বলিনি। এবার চারটি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবারো তার ছেলে বউকে চাকরি দিয়েছেন। চাকরির নামে তিনি ব্যাপক বাণিজ্য করেছেন। এর প্রতিবাদ করেছি আমরা। রাজশাহী সদর আসনের এমপি এলাকায় না আসা পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের স্কুলে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। বাবু নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, স্কুলে মোট ১১ জন শিক্ষক কর্মচারী রয়েছেন। তার মধ্যে পাঁচজনই হলো প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনের আত্মীয়-স্বজন বাকি ৬ জন যারা রয়েছেন তাদের

কাছ থেকেও মোটা অংকের টাকা নিয়ে বিভিন্ন সময় নিয়োগ দিয়েছিলেন এই প্রধান শিক্ষক। তিনি নিয়োগ বাণিজ্য করে এলাকায় বিপুল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। মখরেছুর রহমান বাবু নামের আরেকজন বলেন, প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনের গ্রামের বাড়ি স্কুল থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে রাজাবাড়ি কানাইডাঙ্গা এলাকায়। তিনি এর আগে ওই এলাকার বাসিন্দা এবং তার ভাতিজা এশারুলকে অফিস সহায়ক পদে, তার শ্যালিকা ফারহানা হাবিব লোপা, ভাইয়ের মেয়ের স্বামী (ভাতিজি জামাই) আহসানুল্লাহ এবং সর্বশেষ ছেলেবউ কুসুম খাতুন মৌসুমিকে চাকরি দিয়েছেন। কিন্তু স্কুলটি

গুড়িপাড়াতে হলেও এই এলাকার কাউকে চাকরি দেননি। কারণ তিনি বাইরের লোকজনকে চাকরিতে বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় করেছেন। এসব কারণে এলাকাবাসী তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তবে প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন বলেন, স্থানীয় লোকজনকে চাকরি না দেওয়ায় আমার উপরে তারা হামলার চেষ্টা করেছে এবং তারা নানাভাবে ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করছেন। আমার নামে মিথ্যা অপপ্রচার চালানোসহ বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top