শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা উপস্থাপন বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত

খান আতিকুর রহমান বাবুঃ খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার চুড়ান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন বিষয়ক সভা আজ (সোমবার) দুপুরে খুলনা নগরীর হোটেল সিটি ইন-এ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সিটি মেয়র বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর খুলনার মানুষের জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে শহিদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল চালু করে। কিন্তু বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে এটি বন্ধ করে দেয়। শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের স্থাপন প্রক্রিয়া আরো ত্বরান্বিত হবে আশা করা যায়। ভবিষ্যতে এই বিশ^বিদ্যালয় এলাকাটি সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভূক্ত করার চেষ্টা করা হবে। সম্মানিত অতিথির বক্তৃতায় খুলনা-২ আসনের

সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল বলেন, খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় চিকিৎসা বিষয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে খুলনার মানুষ উপকৃত হবে বলে আশা করা যায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে খুলনার স্বাস্থ্যখাতে কাঙ্খিতমানের উন্নয়ন হয়নি। খুলনার প্রতি দরদ রয়েছে বলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ডেল্টাল কলেজ, শিশু হাসপাতালের মতো উন্নত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সংসদ সদস্য আরও বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করে। শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে

ক্ষমতায় আসার পরেই দেশের উন্নয়ন শুরু হয়। অনেক চক্রান্ত অতিক্রম করে আজ পদ্মাসেতুর মতো বৃহৎ স্থাপনার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ট্যানেল, মাতারবাড়ী বিদুৎ কেন্দ্র, একসাথে একশ সড়ক উন্নয়নের মতো জনহিতকর প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জাননো হয়, দেশের পঞ্চম মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় হিসেবে ২০২১ সালে মহান জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় বিল পাশ হয়। বিশ^বিদ্যালয়টি পুরোদমে চালু হলে এখানে চিকিৎসা বিষয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা লাভ ও উচ্চতর গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হবে। একই সাথে খুলনা অঞ্চলের

প্রায় দুই কোটি মানুষের জন্য মানসম্মত চিকিৎসা সেবাপ্রাপ্তি সহজতর হবে। খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার প্রাস্তাবিত ৫০ একর জমির উপর ৯৬০ শয্যার হাসপাতালসহ বিশ্ববিদ্যালয়টি চালু হলে এই অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবার মানে আমূল পরিবর্তন আসবে। সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ^বিদ্যালয়টি চার হাজার ছয়শত ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। প্রতিবেদনে প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত ধরা হয়েছে। সমীক্ষা প্রতিবেদনটি অনুমোদিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসসহ আনুষাঙ্গিক স্থাপনা নির্মাণের ডিপিপি প্রনয়ণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। ইতোমধ্যে নয়টি মেডিকেল কলেজ ও পাঁচটি নার্সিং কলেজকে শেখ হাসিনা মেডিকেল

বিশ্ববিদ্যালয় অধিভূক্ত করা হয়েছে। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি’র মহাপরিচালক মোঃ বদরুল আরেফনী ও খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হানুরুর রশীদ। সমীক্ষা বিষয়ক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রফেশনাল এসোসিয়েটস লি: এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মঞ্জুর কে. এইচ উদ্দিন। খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভাটি সঞ্চালনা করেন শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ। জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি এবং প্রফেশনাল এসোসিয়েটস লি: এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠানে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান, সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে তাদের মতামত তুলে ধরেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top