ট্রাককের পিছনে দ্রুত গতিতে ছুটে এসে ধাক্কায় ঘটনা স্থানেই অ্যাম্বুলেন্সের ৬ জন নিহত

প্রতিবেদকঃ মীর ইমরান মাদারীপুরঃ পদ্মা সেতুর দক্ষিণ টোলপ্লাজা সড়কে দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও হেলপারসহ ঘটনা স্থানে ছয়জন নিহত হয় । মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ভোর ৩-৪৫ মিনিটে ,ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়কের পদ্মা সেতুর দক্ষিণ পাশে জাজিরা প্রান্তে চলন্ত ট্রাককে পিছন থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অ্যাম্বুলেন্সে চালক মোঃ রবিউল ইসলাম (২৮), হেলপার মোঃ জিলানি (২৬), রোগী যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী লতিফ মল্লিকের স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫৫),

তার মেয়ে লুৎফুন নাহার লিমা (৩০), স্বাস্থ্যকর্মী মোঃ ফজলে রাব্বি (২৮) ও সাংবাদিক মোঃ মাসুদ রানা (৩০)। নিহত জাহানারা ও লূৎফুন নাহার লিমা মা ও মেয়ে ,মোঃ ফজলে রাব্বির তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আনারসিয়া গ্রামে। সাংবাদিক মাসুদ রানার বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাসাইল গ্রামে, মোঃ রবিউলের সহকারী জিলানির বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর গ্রামে।

অ্যাম্বুলেন্সচালক মোঃ রবিউলের ভাই ইয়াছিন হাওলাদার বলেন, তারা দুই ভাই অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে সংসার চালান। রবিউল রোববার রাত দুইটার দিকে ঢাকা থেকে রোগী নিয়ে ভোলা যান। ভোলা থেকে ফেরার পথে তিনি বরিশাল শহর থেকে গতকাল(সোমবার) রাতে আরেকজন রোগীকে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। পদ্মা সেতু এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় তাদের নিহতের সংবাদ পাই।
মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন মোঃ রবিউলের স্বজনরা হাসপাতাল চত্বরে আহাজারি করতে করতে রবিউলের শাশুড়ি রানি বেগম বলেন,

আমার মেয়ের পাঁচ বছর বয়সী একটা ছেলে আছে সে এখন সন্তানসম্ভবা। আমি ওদের দায়িত্ব কার কাছে দেব?
শিবচর হাইওয়ে থানার পরিদর্শক আবু নাঈম মোহাম্মদ মোফাজ্জেল বলেন, পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার ৩০০ থেকে ৪০০ মিটার সামনে ভোরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। অ্যাম্বুলেন্সের চালক রবিউল টানা ২৪ ঘন্টার মত ড্রাইভে ছিলেন । এ কারণে তিনি ক্লান্ত হয়ে সম্ভবত গাড়ি চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে পড়েন । এ কারণে চলন্ত ট্রাককে

পেছন থেকে ধাক্কা দেয় অ্যাম্বুলেন্সটি। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সটি ট্রাকের পিছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই চালকসহ গাড়িতে থাকা ছয়জনের মৃত হয়। দুর্ঘটনায় নিহত ছয়জনের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সচালক রবিউলের মরদেহ তার স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। বাকিদের স্বজনেরা এলে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top