সোনাগাজীতে টাকা না দিয়ে হিন্দু পরিবারের জমি লিখে নিলেন যুবদল নেতা খুরশীদ ভূঞা সহ প্রতারক চক্র

 সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি :::  ফেনীর সোনাগাজীতে রবীন্দ্র কুমার দাস (৭০) প্রকাশ- রবীন্দ্র মাস্টারের মালিকানাধীন উত্তর চরছান্দিয়া মৌজার ১৯১ শতক জমি (বাড়ী ভিটি বাগান ও জমি; যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা) তাকে জিম্মি করে সোনাগাজী উপজেলা যুবদলের নেতা খুরশীদ ভূঞার সহায়তায় পার্শ্ববর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর গ্রামের আলমগীর হোসেন প্রকাশ খোনার (৫৫) পিতা- মোঃ মোস্তফা এর নামে রেজিস্ট্রি করে নেয়। প্রতি শতক জমি ৪২ হাজার টাকা করে মূল্য নির্ধারণ করে ৮০ লাখ ২২হাজার টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে একত্রে পরিশোধ করবে বলে গত ২৮শে ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় মতিগঞ্জ সাবরেজিস্টার কার্যালয়ের রেজিস্ট্রি করে নেয়। রবীন্দ্র কুমার দাস তার লিখিত অভিযোগে জানান- চরছান্দিয়া গ্রামের খুরশীদ আলম ভুঞা ও হারুনুর রশীদ’র মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী মুছাপুর গ্রামের
আলমগীর হোসেনের সাথে পরিচয় হয়, তারা মানসিকভাবে চাপ সৃষ্টি করে তার কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র ও সকল ডকুমেন্টস নিয়ে দলিলপত্র তৈরী করে, তারা কৌশলে ভিকটিম রবীন্দ্র দাসকে অসুস্থ দেখাইয়া তার স্থায়ী ঠিকানা বাদ দিয়া চরছান্দিয়ার সাবেক গিয়াস চেয়ারম্যানের বাড়ী সংলগ্ন আলমগীরের এক আত্মীয়ের বাড়ীতে নিয়ে যায়, পরে সেখানে মতিগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রার আকরাম হোসেন রিয়াদ কে কমিশনের মাধ্যমে জমি রেজিস্ট্রির জন্য নিয়ে যায়, কিন্তু সেখানে রবীন্দ্র মাস্টারের স্থায়ী ঠিকানা না দিয়ে অন্য ঠিকানা দেওয়ায় সাব রেজিস্ট্রার রেজিস্ট্রি করতে রাজি হননি। পরবর্তীতে উল্লেখিত ঘটনার তারিখে তারা একজোট হয়ে দলবদ্ধ যোগাযোগের মাধ্যমে ও সাব রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারী জসিম উদ্দিনের সহায়তায় দলিলে সাক্ষর নিয়ে রেজিস্ট্রি সম্পাদন করে। দলিলে সাক্ষর শেষে টাকা চাহিলে অভিযুক্তরা বহিরাগত লোকজন এনে হট্টগোল ও আতংক সৃষ্টি করে। তারা বলে এখানে আপনার নিরাপত্তা নেই, আপনার সব টাকা নাছির উদ্দিনের মাধ্যমে আপনার ফেনীস্থ বাসায় পৌঁছে দেওয়া হবে। পরে উল্লেখিত বিবাদীগণ তাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে বলে কোন টাকাই পাইবিনা, বেশী বাড়াবাড়ি করলে বা কাউকে জানালে তোকে প্রাণে মারিয়া লাশ গুম করা হবে।
তখন ভিকটিম রবীন্দ্র মাস্টার বাসায় গিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখনো আসামীগণের অব্যাহত হুমকি ধমকির কারণে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের বিষয়টি অবহিত করলে তারা রবীন্দ্র মাস্টারকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেন। সরেজমিন পরিদর্শন করলে বাড়ীর লোকজন জানান- রবীন্দ্র কুমার দাসের বাড়ী ও ঘরে তালা দিয়ে রেখেছে আলমগীর হোসেন নাছির ও হারুন। জিজ্ঞেস করলে জানান বাড়ী সহ সমুদয় সম্পত্তি তারা কিনে নিয়েছে। দলিল লেখক দেলোয়ার হোসেন জানান- জমির দলিল তিনি লিখেছেন তবে লেনদেনের সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেননা, বায়নাপত্র বা লেনদেনের কোন ডকুমেন্টস সম্পর্কে তিনি অবগত নয়। মতিগঞ্জের সাব রেজিস্ট্রার আকরাম হোসেন রিয়াদ জানান – রবীন্দ্র কুমার দাসের সাক্ষ্য নিয়েই দলিল সম্পাদন করা হয়েছে, তিনি টাকা না পাওয়ার বিষয়টি আমি অবগত নয়, আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম, বিষয়টি সমাধান করতে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করবো। অভিযোগকারী রবীন্দ্র কুমার দাস (৭০) পিতা- মৃত অভয় চরণ দাস, উত্তর চরছান্দিয়া (রাম কুমার মহাজন বাড়ী) সোনাগাজী, ফেনী বাদী হয়ে
নিম্নোক্ত ১নং বিবাদী আলমগীর হোসেন খোনার (৫৫), পিতা- মোঃ মোস্তফা, মুছাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালী। ২নং বিবাদী খুরশিদ আলম ভুঞা (৪০) পিতা- মৃত ছিদ্দিকুর রহমান, সাং- উত্তর চরছান্দিয়া, (ভূঞা বাড়ী), সোনাগাজী, ফেনী। ৩নং বিবাদী নাছির উদ্দিন (৫০) পিতা- মৃত ছেরাজুল হক ও ৪নং বিবাদী হারুনুর রশীদ (২৭) পিতা- মৃত ছেরাজুল হক উত্তর চরছান্দিয়া (সওদাগর বাড়ী) সহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনকে আসামী করা হয়েছে। রবীন্দ্র কুমার দাস এই বিষয়ে ফেনীর পুলিশ সুপার বরাবর ৩ জানুয়ারি ২০২৩ ইং লিখিত অভিযোগ দায়ের করে প্রতিকার প্রার্থনা করেছেন, অভিযোগের অনুলিপি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করেছেন। বাদী রবীন্দ্র মাস্টার উল্লেখিত বিবাদীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সহ গণমাধ্যম কর্মীদের সহায়তা কামনা করেছেন। অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন খোনার ও খুরশিদ আলম ভুঞার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা ফোন ধরেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top