নিরেন দাস,জয়পুুরহাট প্রতিনিধিঃ শীতের রাতে জবুথবু হয়ে ঘুমিয়ে আছেন ছিন্নমূলরা। কেউ চাদর, আবার কেউ গামছা-লুঙ্গি কিংবা ছেড়া কাঁথা গায়ে জড়িয়ে ঘুমাচ্ছেন। তবে পৌষের শীত তা মানছে না। থরথর করে কাঁপছে শীতার্ত মানুষদের শরীর শীতের তীব্রতা বাশীতার্ত মানুষ খুঁজে তাদের গায়ে কম্বল জড়িয়ে দেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম জয়পুরহাটে গভীর রাতে পথে পথে ছিন্নমূল ও শীতার্ত মানুষ খুঁজে তাদের গায়ে কম্বল জড়িয়ে দেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম।
তিনি গত শনিবার থেকে এমন সেবা মূলক কার্যক্রম শুরু করেছে। যা প্রথম দিনেই গভীর রাতে পৌর শহরের পাঁচুর মোড় জিরো পয়েন্ট, তৃপ্তি মোড়, জয়পুরহাট রেলস্টেশনের প্লাটফর্ম, রাস্তা ও লাইনের পাশে শীতবস্ত্রহীন থাকা অসহায়, হতদরিদ্র, পথশিশু ও প্রতিবন্ধী মানুষের মাঝে ৩ শতাধিক কম্বল বিতরণ করা হয়। কম্বলের উষ্ণতা পেয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমালেন তারা।
এসময় পুলিশ সুপারের সাথে উপস্থিত ছিলেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহেদ আল-মামুন, জয়পুরহাট সদর থানার ওসি (তদন্ত) সরোয়ার হোসেনসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের অনন্য কর্মকর্তাগণ।
এই প্রচণ্ড শীতের মধ্যে শীতবস্ত্র পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেন অসহায় শীতার্ত মানুষগুলো। কনকনে শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে পাতলা এক চাদর গায়ে জড়িয়ে রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে ঘুমিয়ে ছিলেন ৭০ বছর বয়সী ভিক্ষুক মকবুল হোসেন। পুলিশ সুপার তার গায়ে কম্বল দেওয়ায় তার ঘুম ভেঙে যায়। তিনি খুঁশিতে আত্মহারা। তিনি বলেন, আমি একজন ভিক্ষুক। অন্যের কাছে হাত পেতে যা পাই, তাই দিয়ে দিন চলে। থাকার কোনো জায়গা নেই, তাই রাতে স্টেশনে এসে ঘুমিয়ে পড়ি। এই শীতের রাতে খুব ঠান্ডা লাগে। ঘুমিয়ে গেলেও ঠান্ডায় আবার জেগে উঠি। ‘একটি চাদরে শীতের রাতে ঠিকমত ঘুম হচ্ছিল না, স্যার কম্বল দেওয়াতে আমি খুব খুশি। এখন ভালোভাবে ঘুমাতে পারবো।
মনোয়ার নামে আরেকজন বলেন, এখন রাতে অনেক শীত লাগে। একটি চাদর জড়িয়ে ঘুমিয়ে যাই। তাতে কি আর শীত যায়? কম্বল পাওয়াতে ভালো হলো। একটু গায়ে দিলেই শরীর গরম হচ্ছে। রাতে ঘুম ভালো হবে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম বলেন, পেশাদারিত্বের কারণে অনেক সময় রাতে বের হতে হয়। তখন দেখেছি ছিন্নমূল মানুষের করুণ দৃশ্য। এ থেকেই রাতে শীতবস্ত্র নিয়ে তাদের পাশে একটু দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। পুলিশ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। হোক তা প্রকাশ্যে অথবা গোপনে অথবা নীরবে।
তারই ধারাবাহিকতায় রাতে শীতবস্ত্র নিয়ে বের হয়ে দেখলাম এই শীতে মানুষ কত কষ্ট করে রাতযাপন করছে। তাই তাদের পাশে একটু দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। মিডিয়াকে এড়ানোর জন্য না জানিয়ে রাতে বের হলেও মিডিয়ার চোঁখ ফাঁকি দেওয়া যায়নি। তিনি আশা করেন দেশের বিত্তবানরা শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি মানবিক কাজে এগিয়ে আসবেন। মোহাম্মদ নূরে আলম পুলিশ সুপার হিসেবে জয়পুরহাটে যোগদানের পর থেকে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন মানবিক কাজের জন্য তিনি যোগদানের অল্প কয়েকদিনে জয়পুুরহাট জুড়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। নিজ উদ্যোগে পুলিশ সুপার এমন মহৎ কাজ করাই তিনি আবারো প্রমাণ করলেন”পুলিশি জনতা জনতায় পুলিশ” পুলিশ’পুলিশ জনগণের সেবক।
্