সফিয়ার রহমান,পাইকগাছা খুলনাঃ ৮ই ডিশেম্বর রাত্র তখন পৌনে দুইটা কুয়াশায় ঘেরা শীতের রাত রাত্রিকালীন টহল ডিউটিরত অবস্থায় ভান্ডারকোর্ট বটতলার দিকে পৌছালে হটাৎ সামনে পড়লো একটা ছেলে। সন্দেহজনক গতিবিধি দেখে নাম ঠিকানা জিজ্ঞাসা করলে সে সোহেল (ছদ্মনাম) বলতেই তার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি পানি ছলছল করছে। আমার মনে কৌতুহল সৃষ্টি হল বিষয়টা কি তখন সোহেল বললো স্যার আমার বাড়ি
রুপসা আমি বাড়ি যাওয়ার জন্য কোন গাড়ি বা ভ্যান খুজতিছি। আমার সন্দেহ আরো বাড়লো পরবর্তীতে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল জানালো স্যার এখানে আমার শশুর বাড়ি আমার স্ত্রী আমার সাথে রাগারাগি করে এক মাস আগে আমার দেড় বছরের ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে চলে আসছে। আমি আমার ছেলের জন্য কিছু খাবার নিয়ে আসছি রাতে কিন্তু শশুর বাড়ির লোক আমাকে ঘরে উঠতে দেয়নি। এমনকি তাদের
মেয়ের ঘরে তালা দিয়ে রাখছে। বিষয়টা শুনে আমি তার শশুরবাড়ি যেতে চাইলে সোহেল বারবার না করছিলো যে স্যার পুলিশ নিয়ে গেলে আমারই দোষ হবে তারপরও আমি ভাবলাম দেখি একটু চেষ্টা করে মিলিয়ে দিতে পারি কিনা। সেই রাতেই গেলাম তার শশুরবাড়ি দেখলাম তালাবদ্ধ একটা রুম সোহেল বললো স্যার ঐ রুমেই আমার স্ত্রী রুমা(ছদ্দনাম) আর আমার ছেলে রয়েছে । রুমার মা বাবাকে ডাকলাম কথা বললাম তাদের
অভিযোগ ছিলো সোহেল (জামাই)আমার মেয়েকে প্রায়ই মারপিট করে, আর ওখানে মেয়ে দেবোনা, অনেক শালিশ বিচার করেছি এ নিয়ে। পরবর্তীতে সোহেল তার ভুলের জন্য সবার কাছে মাফ চাইলো এবং মেয়েকে নিয়ে ভালোভাবে সংসার করার অঙ্গীকার করলো।
যাহোক হয়তো আল্লাহর অশেষ রহমত ছিলো পরিবারের সবার সাথে কথা বলে ভুলবোঝাবুঝির অবসান করতে সক্ষম হয়। সোহেল তার স্ত্রীর রুমে গেলে তার
ছোট্টছেলেকে কোলে নিয়ে আবারও কেদে ফেললো। এই কান্না ছিলো হয়তো আবেগে ভালোলাগার কান্না।
ফুটফুটে বাচ্চাসহ আজ সকালে সোহেল দম্পত্তি ক্যাম্পে হাজির, তাদের হাস্যজ্জল চেহারায় বলে দেয় তারা ভালো আছে। তাদের জন্য একটু সময় আর কথা খরচ করেছি এজন্য সাথে নিয়ে আসছিল এক প্যাকেট বেনসন সিগারেট। যদিও সোহেল জানতোনা আমি সিগারেট খাইনা । আমার প্রাপ্তি এতটুকুই তাদের হাস্যজ্জল মুখ। তাদের
সম্মতিক্রমে একটা ছবি তুলে রাখলাম। স্বার্থহীন এমন কাজ করতে সত্যিই আমার ভালো লাগে। সবাই দোয়া করবেন তাদের জন্য। আল্লাহ তাদের সহায় হোক।
(সংগৃহীত MD G Rosul ফেসবুক পেজ পুলিশিং কর্মকান্ড)খোজ নিয়ে জানা যায় মানবিক পুলিশ অফিসার
হিসাবে খ্যাত এএসআই গোলাম রসুল সফলতার সাথে প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি এমন অসংখ্য পারিবারিক বিরোধ বিট পুলিশিং কার্যালয়ে বসে মিমাংসা করে মিষ্টিমুখ করিয়ে একত্র করে দিয়েছেন যেগুলো বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।