কেন্দুয়া প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় রওশন ইজদানী একাডেমীর (উচ্চ বিদ্যালয়) নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি স্বার্থনেসী মহল।সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ২২অক্টোবর কম্পিউটার ল্যাব, অফিস সহায়ক, আয়া, নিরাপত্তাকর্মী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে বিজ্ঞপ্তির আলোকে চাকরি প্রত্যাশীগণ ৫টি পদে ৪৯ জন আবেদন করে এবং যাচাই বাছাই শেষে
৪৪ জন যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ পরীক্ষার জন্য নেত্রকোণায় গত ৩ডিসেম্বর পরীক্ষার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিদ্যালয়ের নিয়োগ কমিটির সদস্য মোঃ আশরাফুল আলম, মোঃ মাসুদ তালুকদার ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ আহসানুল কবির স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক বরাবর গত ১লা ডিসেম্বর আবেদন করলে,জেলা প্রশাসক কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাবেরী জালালকে নির্দেশ দেন নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করার জন্য। এরই
প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর কবিরকে নির্দেশ প্রদান করেন প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরিত নোটিশের মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করার জন্য।এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ আল আমিন ভূঞার সাথে সরজমিনে গিযে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পরীক্ষার আগে নিয়োগ নিশ্চিত করে প্রার্থীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়েছি বলে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটা উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ আহসানুল কবিরের ছেলে অফিস সহায়ক পদে আবেদন করেছে তার চাকরি নিশ্চিত করার জন্য আমাকে বারবার চাপ দিয়েছে এবং এও বলে যে অন্য পদেও তাঁর কাছে চাকরি প্রত্যাশী আছে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে চাকরি নিতে চায় কিন্তু আমি সাফ বলে দিয়েছি টাকার বিনিময়ে কোন প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া হবেনা। যারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে কৃতকার্য হবে প্রকৃতপক্ষে তাকেই নিয়োগ দেওযা হবে। মূলত টাকার বিনিময়ে অভিযোগকারীরা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে চেয়েছিল আমি বাঁধা দেওয়ায় তারা বিভিন্নভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর কবির জানান- লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার আগেই আমরা পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করেছি যে অভিযোগটি উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোনিত এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর চাকরি প্রত্যাশী মোঃ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমি অন্য একটা সরকারি প্রতিষ্ঠানে মাষ্টার রোলে চাকরি করছি এই প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে লোক নেবে তাই আবেদন করেছি । যদি নিয়োগ পরীক্ষায় ভাল করি
তাহলে চাকরি হবে, না হলে হবে না আর টাকার বিনিময়ে চাকরি নেয়া প্রশ্নই আসে না।আমি সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে চাকরির জন্য টাকা দিয়েছি আমার বিরুদ্ধে যে তিনজন মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।অফিস সহায়ক পদে চাকরি প্রত্যাশী কবি রওশন ইজদানীর নাতী, কবি পুত্র জুলফিকার ইজদানীর ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান ইজদানী বলেন- আমার দাদা এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা তারপরও আমার কোন চাকরি নেই পত্রিকার মারফত
জেনে অফিস সহায়ক পদে আবেদন করি, যোগ্যতায় যদি চাকরি হয় হবে,না হলে হবে না, আর লাখ লাখ টাকা দিয়েছি এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কারণ আমার বাড়ি ভিটা বিক্রি করলেও এক লাখ টাকা হবে না।আয়া পদে চাকরি প্রত্যাশী নার্গিস আক্তার বলেন- বিনা বেতনে এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮-১০ বছর ধরে চাকরি করে আসছি। দীর্ঘদিন পর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পেয়ে আবেদন করেছিলাম। পরীক্ষাও হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু একটি কুচক্রী মহল সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন উপায়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে যার কারণে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেছে কতৃপক্ষ।
অভিযোগকারীগণ জানান- সভাপতি আল আমিন ভূঞা ও প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর কবির ৫ পদের জন্য পরীক্ষার আগেই প্রায় ৬০ লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগ নিশ্চিত করে রেখেছে। পরীক্ষা শুধুমাত্র একটা লোকদেখানো। তাই স্বচ্ছ নিয়োগের জন্য নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছিলাম অবৈধ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য। অবশেষে ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশনায় পরীক্ষা স্হগিত ঘোষণা করেছেন প্রধান শিক্ষক।ইউএনও কাবেরী জালাল জানান, অর্থ লেনদেনের অভিযোগে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রযেছে । তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।