কেরাণীগঞ্জ সংবাদদাতা মোঃ ইমরান হোসেন ইমুঃ
স্বামী-সন্তানের ন্যায্য হিস্যার দাবিতে কেরাণীগঞ্জে ভাসুরের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মৃত ছোট ভাইয়ের স্ত্রী নূপুর রাণী মন্ডল(৩৪)। আজ ২৯ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে কেরাণীগঞ্জ প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ভুক্তভোগি পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নূপুর রাণী মন্ডল জানান, তারা-দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধিন শুভাঢ্যা কাচারীপাড়া এলাকার বাসিন্দা। স্বামীসহ তার শ^শুরের আরো এক ছেলে সন্তান ও তিন কন্যা সন্তান রেখে মারাযান শ^শুর হরেকৃষ্ণ মন্ডল । এর প্রায় তিনবছর পর বিগত প্রায় দেড় বছর পূর্বে কিডনী সমস্যা জনিত কারনে মারাযান তার স্বামী-মৃত শ্রী শুভাষ চন্দ্র মন্ডল। এরপর থেকেই তাকে এবং তার একমাত্র সন্তান শান্ত মন্ডল(১৩)কে ভিটেছাড়া করতে বিভিন্ন পায়তারা করতে থাকেন ভাসুর গোবিন্দ মন্ডল(৫৬)। এরই অংশ হিসেবে লম্পট ভাসুর আমাকে কু-নজরে দেখে আসছিল এবং আমার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষে বিভিন্ন সময় ইশারা-ঈঙ্গিত প্রদর্শনসহ নানা অঙ্গভঙ্গিমা প্রকাশ করে আসছিল।
ভাসুরের কথা উল্লেখ করে নূপুর রাণী আরো বলেন, সারা দিনের কর্মসেরে দিনের শেষে রাতে আমি আমার সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে রাতের আধারে বিভিন্ন সময় সে আমার ঘরের আসপাশে ঘোরাফেরা করতো এবং কোন ওজর আপত্তি ছাড়াই রাত-বেরাতে সে আমার দরজায় কড়া নাড়তো। এরই ধারা বাহিকতায় গত ৩ নভেম্বর গভীর রাতে আমার সন্তানের বাথরুমের প্রযোজন হলে আমি আমার সন্তানকে বাথরুমে রেখে আমি বাড়ির উঠানে দাড়িয়ে থাকা অবস্থায় আমার লম্পট ভাসুর গোবিন্দ মন্ডল হঠাৎ পেছন থেকে এসে আমাকে জাপটে ধরে এবং আমার বুক ও শরীরের অন্যান্য স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এসময় আত্মরক্ষার্থে আমি আর্ত চিৎকার করার চেষ্টা করলে সে আমার মুখ চেপে ধরে। পরবর্তীতে আমার ছেলে বাথরুম থেকে বেড়িয়ে এলে সে দৌড়াইয়া দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। এ বিষয়ে গত ৫ নভেম্বর আমি বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করি, যাহার মামলা নং-২০ তারিখ-০৫-১১-২০২২ইং।
তিনি বলেন, এর আগেও সে বিভিন্ন ভাবে আমাকে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার সে সব প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে আমাকে নানা অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়াসহ প্রাণনাশের হুমকী দিয়ে আসছিল। তাছাড়া আমি ও আমার একমাত্র সন্তানকে ভিটে-মাটি ছাড়াকরে আমার স্বামীর সমস্ত সহায়-সম্পত্তি আত্মসাতের পায়তার করে আসছিল। এ লক্ষে সে আমার বিরুদ্ধে একাধিক সাজানো মামলা রুজু আমাকে আমার স্বামীর ভিটে-মাটিছাড়া করার পায়তাড়া করে আসছে। এসকল বিষয় নিয়ে গত ১৫ আগষ্ট দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করি।
তাছাড়া একই ধরনের হুমকী –ধামকীর ভয়ে গত ১১অক্টোবর দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় আমি বাদী হয়ে পুনরায় আরো একটি সাধারন ডাইরী নথিভুক্ত করি যাহার নং-৬৪৩/২২,তারিখ ১১-১০-২০২২ইং। থানা পুলিশ ওই ডাইরীটি প্রসিকিউশনের মাধ্যমে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা যাচাই করেন।
নূপুর রাণী বলেন আমার দায়েরকরা মামলায় সে গ্রেফতার হয়ে কিছুদিন জেল হাজতে থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে পুনরায় আমাকে মারধর করে ও নানাভাবে ভয়ভীতির মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকী দিয়ে আসলে তার কু-লালসা থেকে নিজেকে রক্ষার্থে ও প্রাণ নাশের ভয়ে বর্তমানে আমি আমার একমাত্র সন্তান শান্ত মন্ডলকে নিয়ে স্বামী সংসার থেকে পালিয়ে এসে আমার এক পিসির বাড়ীতে আশ্রয় নিয়ে সেখানে বসবাস করছি। তাই আজ এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমি আমার লম্পট ভাসুরের মুখ ও মুখসের আড়ালের চেহারা জাতীর কাছে তুলে ধরতে এবং স্বামী-সন্তানের ন্যায্য হিস্যা বুঝিয়া পাইতে আইনের যথাযথ কর্তপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী নুপুর রাণী মন্ডলের একমাত্র সন্তান ষষ্ঠ শ্রেণী পড়–য়া স্কুলছাত্র শান্ত মন্ডল ও ভাই শিশির মিত্র।